হযরত শাহ করম আলী ফকির

জাহাঙ্গীর আলম : || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ রাত ১০:০৬, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫, ৩১ আশ্বিন ১৪৩২
ছবি: বিএমএফ টেলিভিশন।

ছবি: বিএমএফ টেলিভিশন।

আধ্যাত্মিক সাধক হযরত শাহ করম আলী ফকির কুষ্টিয়ার দহকুলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্ম তারিখ সম্পর্কে তেমন সুস্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

আধ্যাত্মিক সাধক হযরত শাহ করম আলী ফকির কুষ্টিয়ার দহকুলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্ম তারিখ সম্পর্কে তেমন সুস্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

দহকুলা গ্রামের প্রবীণ লোকদের মুখে বংশ পরম্পরায় হযরত শাহ করম আলী ফকির সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য জানা যায়। তাঁর আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে সমাজে নানা গল্প কথা প্রচলিত রয়েছে। তিনি যৌবনকাল থেকেই অত্যন্ত ধার্মিক ছিলেন। ধর্ম অন্বেষণের জন্য সংসার জীবন ত্যাগ করে তিনি বেশ কিছু দিন সন্ন্যাসী হয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান। সন্ন্যাস জীবন শেষে বেশ কয়েক বছর পর তিনি আবার দহকুলা গ্রামে ফিরে আসেন। দহকুলার অদূরে কাথুলিয়া গ্রামে একটা নির্জন জঙ্গলের ভিতর জীবনযাপন শুরু করেন এবং সেখানে আস্তানা গড়ে তোলেন।

লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে তিনি একদিন জঙ্গলের ভিতর দুপুরবেলায় বাঘ-সিংহের সাথে বসে গল্প করতেছিলেন। ভাদালিয়া হাটে যাওয়ার সময় কিছু মানুষ তা দেখতে পেয়েছিলেন। এঘটনায় তৎকালীন সময়ে এলাকার মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ-ই ঘটনার অল্প কিছু দিন পর একদিন প্রচন্ড ঝড়বৃষ্টির মধ্যে তিনি জঙ্গলের মধ্যে বসে আছেন। আশেপাশের সব এলাকায় প্রবল ঝড়বৃষ্টি হলেও তিনি যেখানে বসে ছিলেন সেখানে এক ফোঁটা বৃষ্টিও পরিলক্ষিত হয়নি। ভাদালিয়া হাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিছু লোক প্রচন্ড বৃষ্টির কবলে পড়ে দৌড়ে ফকিরের আস্তানায় আশ্রয় নিলে দেখতে পান; ফকির গভীর ধ্যানে মগ্ন আর কয়েকটা বাঘ-সিংহ তাকে ঘিরে বসে আছে।

করম আলী ফকিরের আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে জানাজানি হলে তিনি সেখান থেকে অতিদ্রুত স্থান পরিবর্তন করেন। কাথুলিয়ার আস্তানা ত্যাগ করে তিনি আলামপুর রামনগর এলাকায় নির্জন জঙ্গলে পুনরায় আস্তানা গড়ে তোলেন। বেশ কয়েক বছর বসবাসের পরে রামনগর এলাকায় ১৩৩২ বঙ্গাব্দের ২৭ শে ভাদ্র তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।পরবর্তীতে তাঁর মৃতদেহ আত্মীয় স্বজনেরা দহকুলা গ্রামে এনে দাফন কার্য সম্পন্ন করেন।

এছাড়াও তাঁর সম্পর্কে ঘরের চালে বসে চারো পেতে মাছ ধরা, আশপাশের সব গ্রাম বন্যায় ডুবে গেলেও দহকুলা গ্রামে বন্যার পানি ঢুকতে না পারা, দুরারোগ্য বালা-মুসিবত থেকে মুক্তির মতো অসংখ্য অলৌকিক ঘটনার গল্প লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে। প্রতিবছর ২৭ শে ভাদ্র হযরত শাহ করম আলী ফকিরের মাজার প্রাঙ্গণে ওরশ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

লেখক 
জাহাঙ্গীর আলম 
প্রভাষক ( ইসলামের ইতিহাস ) 
আফসার উদ্দিন গার্লস ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা
কুষ্টিয়া।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়