অভিমান নয়, আত্মমর্যাদা — নীরবতার শক্তি

শিরিন আকতার || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৪:২৯, শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ১৬ কার্তিক ১৪৩২
ছবি : ফাইল ফটো

ছবি : ফাইল ফটো

অভিমান আসে ভালোবাসা থেকে,
আর আত্মমর্যাদা জন্ম নেয় আত্মচেতনা থেকে।
এই দুয়ের সীমারেখা বোঝার মধ্যেই আছে পরিণত মানুষের পরিচয়।

আমরা অনেকেই ভুলে যাই—
অভিমান মানে কারও কাছে কিছু পাওয়ার আশা,
আর আত্মমর্যাদা মানে নিজের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি।
যেখানে অভিমান অন্যের আচরণের প্রতিক্রিয়া,
সেখানে আত্মমর্যাদা নিজের অবস্থানের ঘোষণা।

ভালোবাসা, বন্ধুত্ব কিংবা সম্পর্ক—
সব জায়গায় কিছু মানুষ আছেন যারা ভাবে,
“চুপ করে থাকলে আমি দুর্বল।”
আসলে না।
চুপ থাকা কখনও দুর্বলতা নয়,
বরং নিজের সম্মান রক্ষা করার নীরব প্রতিবাদ।

যে মানুষ অভিমান করে, সে চায় কেউ এসে তাকে বুঝুক;
কিন্তু যে আত্মমর্যাদাকে আঁকড়ে ধরে,
সে জানে—
সব বোঝাপড়ার দরকার নেই,
নিজেকে হারিয়ে ফেলার মতো ভালোবাসা কোনো ভালোবাসা নয়।

একসময় আসে, যখন মানুষ ক্লান্ত হয় ব্যাখ্যা দিতে দিতে।
তখন সে বলে না “তুমি কষ্ট দিলে”,
বরং বলে— “এখন আমি নীরব থাকব, কারণ আমার শান্তিই আমার প্রথম দায়িত্ব।”

আত্মমর্যাদা শেখায়—
নিজের মান কমিয়ে কখনও কারও মন জেতা যায় না।
যে সম্পর্কের ভিত্তি বোঝাপড়া নয়,
সেখানে বিনয়ও একদিন অপমানের রূপ নেয়।

অভিমান ক্ষণস্থায়ী,
আত্মমর্যাদা স্থায়ী।
অভিমান ভাঙে কথায়,
আত্মমর্যাদা রক্ষা পায় নীরবতায়।
আর তাই, পরিণত জীবনের আসল শক্তি হলো—
নিজের ভেতরে শান্ত থাকা, নিজের মর্যাদাকে অক্ষুণ্ণ রাখা।

তাই বলি,
অভিমান নয়—
আত্মমর্যাদা।
যেখানে তুমি নত হও কেবল ভালোবাসার কারণে,
কিন্তু কখনও নিজের সম্মান হারিয়ে নয়।

লেখক পরিচিতি:
শিরিন আকতার — মুক্তচিন্তা ও আত্মবোধের লেখক, যিনি সম্পর্ক, মানবিকতা ও জীবনবোধ নিয়ে নিয়মিত লেখেন।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়