মুচলেকায় ছাড়া হলো বৈষম্যবিরোধীদের ৩ নেতাকে
স্টাফ রিপোর্টার || বিএমএফ টেলিভিশন
রাজধানীর ধানমন্ডিতে হাক্কানী পাবলিশার্সের মালিকের বাসায় ঢোকার চেষ্টায় আটক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুচলেকা নিয়ে তিনজনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২০ মে) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
তাদের ছাড়িয়ে আনতে গিয়ে সমালোচনার মুখে আব্দুল হান্নান মাসউদ। তবে তার দাবি, ডিএমপি কমিশনারের অনুরোধে মধ্যস্থতা করতে যান তিনি।
পুলিশ বলছে, সোমবার (১৯ মে) রাতে ধানমন্ডির ৪ নম্বর সড়কে ওই ব্যক্তিরা বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছিলেন। পরে তাদের পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। এর মধ্যে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বি, ঢাকা মহানগর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব ফারহান সরকার ডিনার (২৬) ও মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের শিক্ষার্থী ট্রাফিক সহায়ক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জিসান (২৪)।
এদিকে ঘটনা জানাজানি হলে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানা এলাকার আহ্ববায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ ৩ জনকে অব্যাহতি দেয় সংগঠনটি।
রমনা বিভাগের পুলিশের উপ-কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, ভবিষ্যতে তারা এ ধরনের কাজে জড়িত হবেন না, এই মর্মে মুচলেকা দিয়েছেন।
হান্নান মাসউদকে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘একটু ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে। সেই ভুল–বোঝাবুঝিটা নিরসন করতে আসছি। বাইরের বিভিন্ন গোষ্ঠী এটার সঙ্গে জড়িত আছে, আমরা যেটা দেখছি। মানে, আমাদের মানুষগুলোকে ব্যবহার করার চেষ্টা করতেছে বিভিন্ন জায়গায়।
তিনজনকে ছাড়িয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শেষে এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদ থানা থেকে বের হলে তাকে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করে বলেন, যাদের ছাড়িয়ে নিতে এসেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ ছিল। এর জবাবে হান্নান মাসউদ বলেন, ‘আমি আমাদের বৈষম্যবিরোধী (ছাত্র আন্দোলন) আহ্বায়কের মেসেজটা পেয়ে দেখতে আসছি।
বিষয়টি সাংগঠনিকভাবে তদন্ত করা হবে। আর যাদের কথা বলছেন, তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া হবে। কিন্তু আপনি তো তাদের ছাড়িয়ে নিতে আসছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে হান্নান মাসউদ বলেন, এরা আসলে ব্যবহৃত হইছে। এদেরকে যারা ব্যবহার করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও অ্যাকশন নেয়া হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের হতাহতের ঘটনায় ইচ্ছেমতো আসামি করে মামলা করার অনেক ঘটনা ঘটেছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, আসামি করা হয়েছে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে।
আবার ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব, বিদ্বেষ ও স্থানীয় বিরোধও ভূমিকা রেখেছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের পক্ষ থেকে একাধিকবার বলা হয়, মামলা হলেই গ্রেপ্তার করা যাবে না।
২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিল, অতি উৎসাহী ও স্বার্থান্বেষী মহল ঢালাওভাবে মামলা গ্রহণে পুলিশের ওপর চাপ দেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে।