সরকারকে র্যাব বিলুপ্তির কথা অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে
ডেস্ক রিপোর্ট || বিএমএফ টেলিভিশন
নিরাপত্তা খাত সংস্কারের অংশ হিসেবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) বিলুপ্তির কথা বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে। এ বাহিনীর যেসব সদস্য জোরপূর্বক গুমের সঙ্গে জড়িত নন, তাদের নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত যাওয়ার বিষয়ও নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরকে (ডিজিএফআই) কেবল সামরিক গোয়েন্দা কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সংস্থাটির আইনি কর্তৃত্ব ও সম্পদ স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত এবং সীমিত করতে হবে।
নিরাপত্তা খাত সংস্কারের অংশ হিসেবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) বিলুপ্তির কথা বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে। এ বাহিনীর যেসব সদস্য জোরপূর্বক গুমের সঙ্গে জড়িত নন, তাদের নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত যাওয়ার বিষয়ও নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরকে (ডিজিএফআই) কেবল সামরিক গোয়েন্দা কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সংস্থাটির আইনি কর্তৃত্ব ও সম্পদ স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত এবং সীমিত করতে হবে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের জোরপূর্বক গুম নিয়ে ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্স অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সেসের (ডব্লিউজিইআইডি) এক প্রতিবদনে এ সুপারিশ করা হয়েছে। গত জুনের মাঝামাঝি বাংলাদেশ সফর শেষে ডব্লিউজিইআইডির দুই সদস্যের কারিগরি প্রতিনিধি দল এই সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন গত ২৫ জুন সরকারকে পাঠিয়েছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বেশিরভাগ জোরপূর্বক গুম র্যাবের হাতে সংঘটিত হয়েছে এবং ডিজিএফআই-এরও সম্পৃক্ততা রয়েছে।
প্রতিবেদনে ডব্লিউজিইআইডি র্যাবের যেসব সদস্য জোরপূর্বক গুমের সঙ্গে জড়িত নন, তাদের নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠানোর এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই)-কে কেবল সামরিক গোয়েন্দা কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ রাখার সুপারিশ করেছে। সংস্থাটির আইনি কর্তৃত্ব ও সম্পদ স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত এবং সীমিত করারও কথা বলা হয়েছে। ডব্লিউজিইআইডি জোরপূর্বক গুম বিষয়ে অব্যাহত দায়মুক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সব নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি চলমান তদন্ত ব্যবস্থাকে পূর্ণ সহযোগিতা করে জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের তৈরি গুম কমিশন, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের তথ্যানুসন্ধান দল এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে র্যাব বিলুপ্ত করার সুপারিশ করেছিল।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী সমকালকে বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাহিনীর ভেতর ইতোমধ্যে সংস্কার কার্যক্রম চলছে। তিনি উল্লেখ করেন, র্যাব সরকারি আদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সরকার আদেশ দিলে র্যাবের সদস্যরা নিজ নিজ বাহিনীতে ফিরে যাবে। তিনি র্যাবের অসংখ্য ভালো কাজ রয়েছে জানিয়ে এর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন এবং বাহিনীর কার্যপরিধির সংস্কার করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
তবে র্যাব বিলুপ্তি নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। এইচআরডব্লিউ-এর 'আফটার দ্য মনসুন রেভল্যুশন: এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় ইউরোপের কয়েকটি দেশের কূটনীতিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পশ্চিমা রাষ্ট্রদূত বলেন, র্যাব যেমন জঘন্য অপরাধ দমন করেছে, তেমনি গুরুতর অপরাধও করেছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, র্যাব বিলুপ্ত হলে অপরাধ দমনে বড় ধাক্কা লাগবে এবং জনগণের নিরাপত্তাবোধ কমে যাবে। বরং তিনি বাহিনীটির প্রয়োজনীয় সংস্কারে মনোযোগ দেওয়ার কথা বলেছেন।
আরেক পশ্চিমা কূটনীতিক মনে করেন, শেখ হাসিনার আমলে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো যেভাবে রাজনৈতিক প্রভাবে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে, সেখান থেকে বের হয়ে তাদের সংস্কার করা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ৫ আগস্টের পরেও বাহিনীটির অপরাধ লুকানোর প্রবণতা দেখা গেছে এবং তারা তাদের 'আয়নাঘর'গুলো ধ্বংস করে অপরাধের আলামত নষ্ট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই কূটনীতিকের মতে, রাজনৈতিক সরকার ফিরে এলে বাহিনীটি যে তাদের আগের রূপে ফিরবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।