চিকিৎসা কি এখন শুধুই সামর্থ্যের প্রশ্ন? একজন শিশুর ডাক্তার দেখাতে ১২০০ টাকা!
ফিরোজ আলম। || বিএমএফ টেলিভিশন
বাংলাদেশের চিকিৎসা খাত নানা উন্নয়নের গল্প বললেও, সাধারণ মানুষের জন্য চিকিৎসা পাওয়া যেন দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। বিশেষ করে শিশুদের চিকিৎসা, যেখানে মানবিকতার ছোঁয়া থাকা উচিত, সেখানে এখন ফি-ভিত্তিক বাণিজ্যের ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশের চিকিৎসা খাত নানা উন্নয়নের গল্প বললেও, সাধারণ মানুষের জন্য চিকিৎসা পাওয়া যেন দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। বিশেষ করে শিশুদের চিকিৎসা, যেখানে মানবিকতার ছোঁয়া থাকা উচিত, সেখানে এখন ফি-ভিত্তিক বাণিজ্যের ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে।
সম্প্রতি ঢাকার একজন খ্যাতনামা শিশু বিশেষজ্ঞের চেম্বারে দেখা গেছে—প্রথম ভিজিটের জন্য ফি ধরা হয়েছে ১২০০ টাকা। দ্বিতীয় ভিজিট এক মাসের মধ্যে হলে ১০০০ টাকা, আর সাত দিনের মধ্যে রিভিউ ভিজিটে ৮০০ টাকা।
প্রশ্ন জাগে—বাংলাদেশের গরিব মানুষ, দিনমজুর, রিকশাচালক, গার্মেন্টস কর্মী—তারা কি তাদের সন্তানের চিকিৎসা এই ফি দিয়ে করাতে পারবে?
বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে যখন দেখি, উক্ত চিকিৎসক একজন সরকারি হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান। তাহলে সরকার যেখানে জনগণকে কম খরচে চিকিৎসা সেবা দেয়ার কথা বলছে, সেখানে এই চিকিৎসকের প্রাইভেট প্র্যাকটিসে এমন উঁচু ফি কতটা ন্যায্য?
অবশ্যই চিকিৎসকদের শ্রম ও দক্ষতার মূল্য আছে। কিন্তু চিকিৎসা যদি শুধু টাকার বিনিময়ে হয়—তা কি সত্যিকারের সেবা?
বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে, যেখানে দ্রুত ও মানবিক সেবা সবচেয়ে জরুরি।
সরকারের উচিত একটি ন্যায্য ও নিয়ন্ত্রিত ভিজিট ফি কাঠামো নির্ধারণ করা এবং সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসে মানবিক শর্ত আরোপ করা। একইসঙ্গে প্রত্যেক চিকিৎসকের মাসে অন্তত কিছুদিন দরিদ্র পরিবারের জন্য ফ্রি সেবা দিন ঘোষণা বাধ্যতামূলক করা উচিত।
চিকিৎসা কখনোই বিলাসবস্তু হতে পারে না। আর যদি সেটাই হয়ে যায়—তাহলে সমাজের বড় একটি অংশ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হবে। সেটি হবে এক ধরনের নীরব বৈষম্য, যা একটি রাষ্ট্রের জন্য লজ্জাজনক।