বিজয় উল্লাস সুনামগঞ্জে:: শ্রদ্ধায় সিক্ত শহীদ মিনার
প্রীতম দাস, সুনামগঞ্জ: || বিএমএফ টেলিভিশন
মহান বিজয় দিবস-২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সুনামগঞ্জে উদযাপিত হয়েছে। সকালে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে অবস্থিত শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
মহান বিজয় দিবস-২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সুনামগঞ্জে উদযাপিত হয়েছে। সকালে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে অবস্থিত শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
শহীদ মিনারে প্রথমে জেলা প্রশাসক ড. ইলিয়াস মিয়া এবং এরপর পুলিশ সুপার এ,বি,এম জাকির হোসেন-এর নেতৃত্বে জেলা পুলিশ প্রশাসন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। তাঁদের পর পরই মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা প্রেসক্লাব, সিপিবি, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
সকাল ৯টায় জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং মহান বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ শুরু হয়। জেলা প্রশাসক ড. ইলিয়াস মিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন। কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, জেলা কারাগারের সুসজ্জিত দল এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিএনসিসি ও স্কাউট দল। কুচকাওয়াজ শেষে মনোজ্ঞ শরীরচর্চা ও ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে জেলা প্রশাসক ড. ইলিয়াস মিয়া তাঁর আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে বলেন,"আজ আমাদের জন্য এক গৌরবোজ্জ্বল দিন। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম আর ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতা আমাদের পূর্বপুরুষদের দেওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার, যা কোনো কিছুর বিনিময়ে কেনা যায় না। আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতির শ্রেষ্ঠ বীর সন্তানদের যাদের আত্মত্যাগে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। শ্রদ্ধা জানাই সকল ৭১ এর সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আত্মদানকারী সকল শহীদদের।"
তিনি আরও বলেন,"মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। শহীদদের স্বপ্ন ছিল একটি সুখী, সমৃদ্ধ এবং অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা। আসুন, আমরা সকলে একযোগে সেই লক্ষ্য পূরণে কাজ করি। বর্তমানে বাংলাদেশ যে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে, সেই অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করতে আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। বিজয় দিবসের এই অঙ্গীকার হোক - উন্নত ও আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশ গড়া।"
অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল দুপুরে হাসপাতাল, জেলখানা ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, বিকেলে মহিলাদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।