ইরান না ছাড়লে আজ থেকেই আফগানদের গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ সকাল ১০:৩২, সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ইরানে অবস্থানরত লাখ লাখ আফগান অভিবাসী ও শরণার্থীর জন্য কড়া বার্তা দিয়েছে তেহরান। দেশ ছাড়ার জন্য দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হয়েছে রোববার। আর আজ সোমবার (৭ জুলাই) থেকে যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই, এমন আফগানদের গ্রেপ্তার ও দেশে ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম শুরু করবে ইরান। দেশটির সরকারের এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ বাড়ছে আন্তর্জাতিক মহলে। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। এমন এক সময় এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো, যখন ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘাতের পর ইরানে নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।

ইরানে অবস্থানরত লাখ লাখ আফগান অভিবাসী ও শরণার্থীর জন্য কড়া বার্তা দিয়েছে তেহরান। দেশ ছাড়ার জন্য দেওয়া চূড়ান্ত সময়সীমা শেষ হয়েছে রোববার। আর আজ সোমবার (৭ জুলাই) থেকে যাদের বৈধ কাগজপত্র নেই, এমন আফগানদের গ্রেপ্তার ও দেশে ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম শুরু করবে ইরান। দেশটির সরকারের এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ বাড়ছে আন্তর্জাতিক মহলে। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। এমন এক সময় এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো, যখন ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘাতের পর ইরানে নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।

ওই সংঘাতে জড়িয়ে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রও। গত মার্চ মাসে ইরান সরকার একটি আদেশ জারি করে। সেখানে অবৈধভাবে বসবাসকারী আফগানদের ৬ জুলাইয়ের (রোববার) মধ্যে স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, তা না হলে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে আদেশে জানানো হয়।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, ইরান থেকে আফগানদের গণহারে ফেরত পাঠানো হলে আফগানিস্তান আরো অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে।যুদ্ধ, দারিদ্র্য এবং তালেবান শাসন থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসা এই মানুষদের অনেকে কয়েক দশক ধরে ইরানে বসবাস করছেন।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, তেহরান ২০২৩ সালে ‘অবৈধভাবে’ দেশে বসবাসকারী বিদেশিদের বহিষ্কারের জন্য একটি অভিযান শুরু করে। পরে চলতি বছরের মার্চে ইরান সরকার একটি সময়সীমা ঘোষণা করে-যার মধ্যে যারা বৈধতা ছাড়া অবস্থান করছে, তাদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এরপর থেকে প্রায় সাত লাখ আফগান ইরান ছেড়েছে, শুধু জুন মাসেই ফিরে গেছে ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি।

ইরানে প্রায় ৪০ লাখ আফগান শরণার্থী ও অভিবাসী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তাদের অনেকে সেখানেই জন্মেছে এবং বেড়ে উঠেছে। তেহরানে বসবাসকারী আফগান রেস্তোরাঁ মালিক বতৌল আকবরি আল জাজিরাকে বলেন, ইরানে এখন ‘অ্যান্টি-আফগান’ মনোভাব দেখা যাচ্ছে, যা আমাদের ভীষণভাবে কষ্ট দিচ্ছে। আমাদের অনেকের কাছে এটাই একমাত্র চেনা ঘর।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানায়, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালীন প্রতিদিন গড়ে ৩০ হাজার আফগানকে ইরান থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যেখানে আগের গড় ছিল দিনে মাত্র দুই হাজার।

ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি বলেন, আমরা সবসময় অতিথিপরায়ণ ছিলাম। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা আমাদের অগ্রাধিকার। অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশিদের অবশ্যই ফিরে যেতে হবে।

তেহরান থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক রেসুল সেরদার জানান, ইরানের চলমান অর্থনৈতিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি এবং নানা সামাজিক সমস্যার পেছনে আফগান অভিবাসীদের দায়ী করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধের পর এ অভিযোগ আরও জোরালো হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া প্রচারণা এবং রাজনৈতিক বক্তব্যের মাধ্যমে, যেখানে বলা হচ্ছে—ইসরায়েল নাকি আফগানদের গুপ্তচর হিসেবে ব্যবহার করছে।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়