উপলক্ষ আশুরা, যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবার জনসম্মুখে খামেনি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিএমএফ টেলিভিশন
ইরান-ইসরায়েল ১২ দিনের সংঘাতের পর প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে এলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। স্থানীয় সময় শনিবার (৫ জুলাই) তেহরানে আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তাকে উপস্থিত দেখা যায়।
ইরান-ইসরায়েল ১২ দিনের সংঘাতের পর প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে এলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। স্থানীয় সময় শনিবার (৫ জুলাই) তেহরানে আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তাকে উপস্থিত দেখা যায়।
৮৫ বছর বয়সী খামেনির এই উপস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, তেহরানের ইমাম খোমেনি মসজিদে উপস্থিত জনতা তাকে দেখে উঠে দাঁড়ায়, তিনি হাত নেড়ে ও মাথা নেড়ে তাদের সম্ভাষণ জানান।
উল্লেখ্য, ১৩ জুন শুরু হওয়া সংঘাতের পর খামেনি কোনো সরাসরি জনসমক্ষে আসেননি, তার সব বক্তব্যই ছিল পূর্বে ধারণকৃত।
জুনের ২২ তারিখে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘আমরা জানি খামেনি কোথায়, কিন্তু তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা নেই—এই মুহূর্তে।’
২৬ জুন রাষ্ট্রীয় টিভিতে প্রচারিত এক রেকর্ডেড ভাষণে খামেনি বলেন, ‘আমরা আত্মসমর্পণ করিনি। বরং আমেরিকার মুখে চড় মেরেছি কাতারে তাদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে।’
এর জবাবে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘তুমি একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ। দেশের মানুষের শ্রদ্ধেয় নেতা। সত্যটা বলো—তোমরা ভয়ানকভাবে হার মেনেছ।’
ইরান জানিয়েছে, এই যুদ্ধে তাদের ৯০০’র বেশি নাগরিক নিহত এবং হাজার হাজার আহত হয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় প্রাণ গেছে অন্তত ২৮ জনের।
২৪ জুন দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
যুদ্ধের পর ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ‘গুরুতর ক্ষতি’ হয়েছে। একই সঙ্গে তারা জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ-কে এসব স্থাপনায় প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।
যুদ্ধকালীন আইএইএর পরিদর্শকরা তেহরানেই অবস্থান করছিলেন। কিন্তু গত বুধবার ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে একটি আইন স্বাক্ষর করলে তারা দেশ ছাড়েন।
আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি শুক্রবার বলেন, ইরানের সঙ্গে আলোচনা পুনরায় শুরু করাটা ‘চূড়ান্তভাবে গুরুত্বপূর্ণ’।
এর মধ্যে আবারও শুরু হয়েছে তেহরান-ওয়াশিংটনের মধ্যে পরমাণু আলোচনা ঘিরে গুঞ্জন। আলোচনার প্রেক্ষাপটে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ইরান এখনো পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির (এনপিটি)- সদস্য এবং এই আন্তর্জাতিক চুক্তি ত্যাগের কোনো পরিকল্পনা নেই।