দ্রুত সাজিদ হত্যার বিচারের দাবিতে ইবিতে ‘হত্যাকাণ্ডের কাফন ঘেরাও’ কর্মসূচি

ইবি প্রতিনিধিঃ || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৫:১৫, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২
ছবি: বিএমএফ টেলিভিশন।

ছবি: বিএমএফ টেলিভিশন।

সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার দ্রুত বিচার দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার দ্রুত বিচার দাবিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘হত্যাকাণ্ডের কাফন ঘেরাও’ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রশাসনিক ভবনের প্রবেশপথে রক্তমাখা কালো রঙের কাফন বিছিয়ে দেওয়া হয় যেন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অফিসে যেতে ওই কাফনের ওপর দিয়েই প্রবেশ করতে হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, ‘সাজিদ আব্দুল্লাহর হত্যাকাণ্ডের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা এর কোনো সুরাহা খুঁজে পাইনি। সিআইডি এখন পর্যন্ত স্পষ্ট করতে পারেনি এটি হত্যাকাণ্ড নাকি অন্য কিছু। যারা বর্তমানে সিআইডির দায়িত্বে আছেন, তাদের প্রতি আমরা আস্থা হারিয়ে ফেলেছি। অনতিবিলম্বে তাদের সরিয়ে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

​বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে যোগাযোগ না করে থাকে, তবে তাদের চেয়ারে থাকার যোগ্যতা নেই। আর যদি যোগাযোগ করার পরও ঘটনার সুরাহা না হয়, তবে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকেও দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার খুনিরা আমাদের সাথেই ঘুরে বেড়াচ্ছে কিনা তা নিয়ে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সাজিদ হত্যার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না। ৬৯, ৯০ কিংবা ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মতো আমরা আগামী দিনেও দাবি আদায়ে প্রস্তুত থাকব।’

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, ‘পাঁচ মাস অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সিআইডি বারবার আমাদের সাথে নাটক করছে। দফায় দফায় সময় নিয়ে সিআইডি কর্তৃপক্ষ কুষ্টিয়া থেকে একটি গল্প লিখে নিয়ে আসে এবং প্রক্টর অফিসে সেই নাটকের মঞ্চায়ন করে। আমরা এই নাটকের মঞ্চ ভেঙে দিয়ে সামনের কর্মসূচিতে যেতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৮ হাজার শিক্ষার্থীর এই ক্যাম্পাসে ট্রিপল মার্ডার ও মেইন গেটে মানুষের মস্তক কেটে ঝুলিয়ে রাখার মতো ঘটনা ঘটলেও প্রশাসন নির্বিকার। ছয় মাস আগে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের কথা থাকলেও তার কোনো বাস্তবায়ন নেই। চিকিৎসাকেন্দ্রে প্যারাসিটামল ছাড়া কিছু পাওয়া যায় না। আমরা এই অথর্ব প্রশাসনের কাছে আর কিছু চাইতে আসিনি, খুব দ্রুতই আল্লাহ চাইলে এই তিনজনকে (ভিসি, প্রক্টর, ট্রেজারার) আমরা ক্যাম্পাস থেকে বিদায় করব।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অদৃশ্য শক্তির কারণে সাংস্কৃতিক চর্চা ও মুক্ত চিন্তায় বাধা দিচ্ছে। গতকালও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে সময় নিয়ে টালবাহানা করা হয়েছে এবং আয়েশা সিদ্দিকা হলে ছাত্রীদের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। যেখানেই মুক্ত চিন্তা ও সাংস্কৃতিক চর্চা হবে, ছাত্রদল সেখানেই তাদের পাশে থাকবে।’

উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই বিকেলে শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর থেকে সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ৩ আগস্ট ভিসেরা রিপোর্টে জানা যায়, তার মৃত্যু শ্বাসরোধে হয়েছে। ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে নিরাপদ ক্যাম্পাস ও সাজিদের হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়