ইকুরিয়া বিআরটিতে দালালদের রাজত্ব , প্রশাসন নিশ্চুপ
ফিরোজ আলম || বিএমএফ টেলিভিশন
ঢাকার ইকুরিয়া বিআরটিএ রোড পারমিট শাখায় দালাল ও গেটইস চক্রের দৌরাত্ম্য এখন ওপেন সিক্রেট। অভিযোগ রয়েছে—এই চক্রের অন্যতম মূলহোতা ফয়েজ আহমেদ, যিনি নিজে অফিস সহকারী হিসেবে পরিচিত হলেও মূলত দালাল ও গেটইস হিসাবে কাজ করেন। তার মাধ্যমেই ঘুষের লেনদেন হয় এবং এই চক্র পুরো শাখাটিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
সাপ্তাহিক কনজুমার ভয়েস এর অনুসন্ধানে দেখা গেছে—ফয়েজ আহমেদ দিনের পর দিন সাধারণ সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ আদায় করেন, পারমিট কিংবা নথিপত্র দ্রুত ছাড়ানোর নামে। আমাদের হাতে থাকা ছবিতে দেখা যায়—অফিস ডেস্কে বসে থাকা ফয়েজ আহমেদ অফিসের কাগজপত্র প্রিন্ট করছেন, এবং আরেকটি ছবিতে নগদ টাকা হাতবদলের দৃশ্যও ধরা পড়েছে।
বিশেষ করে যারা নির্ধারিত নিয়মে পারমিট নিতে আসেন, তাঁদের বারবার হয়রানির মাধ্যমে বাধ্য করা হয় দালাল মারফত ফয়েজ আহমেদের সাথে যোগাযোগ করতে। এরপর শুরু হয় অর্থ লেনদেন। অভিযোগ রয়েছে, ফয়েজ আহমেদ সেই অর্থ নিজের কাছে না রেখে একটি বিশেষ চক্রের মাঝে ভাগ করে দেন। এজন্য তাঁর এত ‘ক্ষমতা’ যে, কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
ভুক্তভোগীদের দাবি, ফয়েজ আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে অফিসের বাইরে থেকেও ভেতরের লোকের মতো সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। তার মোবাইল নম্বরে (যা ইতোমধ্যেই একাধিক অভিযোগে উল্লিখিত) ফোন করলেই তিনি 'দ্রুত কাজ’ করিয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেন—শুধু নির্ধারিত হারে ‘চা-পানির খরচ’ দিতে হয়।
এতকিছুর পরও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নীরবতা বিস্ময়কর ও সন্দেহজনক। দৃশ্যমান ঘুষ লেনদেন, সরাসরি প্রমাণ, বহু অভিযোগ—সবকিছুর পরও কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক সদিচ্ছা নিয়েও।
আমরা এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অবিলম্বে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।