বাগেরহাট পৌরসভা দুর্নীতি অনিয়মের প্রতিবাদের সংবাদ সম্মেলন
আবু-হানিফ,বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ || বিএমএফ টেলিভিশন
বাগেরহাট পৌরসভার উন্নয়ন, অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে সংবাদসম্মেলন করেছে পৌর নাগরিক বৃন্দরা।মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে পৌর নাগরিক পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শেখ মাইনুল ইসলাম মোস্তুফা।
বাগেরহাট পৌরসভার উন্নয়ন, অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে সংবাদসম্মেলন করেছে পৌর নাগরিক বৃন্দরা।মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে পৌর নাগরিক পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শেখ মাইনুল ইসলাম মোস্তুফা।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে বাগেরহাট এর বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের শৃংঙ্খলাহীনতা, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতির মধ্যেৎসব চলে আসছিলো। বাংলাদেশের ৫ আগস্ট এ রক্তের স্রোতের মধ্য দিয়ে সম্পদ ও জীবন বিপন্নের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তন প্রত্যাশিত ছিলো বাগেরহাটের কোন প্রতিষ্ঠানের সেবা প্রদানের মধ্যে সে পরিবর্তন সম্পূর্ণরুপে অনুপস্থিত।
বাগেরহাট পৌরসভা আমরা কি দেখতে পচ্ছি পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে অনিয়মিত, অপ্রতুল, দুর্গন্ধযুক্ত বিশ্বস্ত সূত্র থেকে প্রাপ্ত তেলাপোকা, ইঁদুর মরা) পানি নিরুপায় হয়ে নাগরিকগণকে ব্যবহার করতে হচ্ছে। ২ বার পাওয়ার কথা অথচ একবার পাচ্ছি। আবার বিলও বেশি। পানি স্নাবার এই অমানবিকতাকে কোন শ্রেণির মানুষ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উল্লেখ না করলেও বাগেরহাট ঘোসাইটি মনে করে তাদের আরো বেশি সোচ্চার হওয়ার সময় এসেছে।
এবার আসি রাস্তা-ঘাট বিষয়ে শহরের এমন কোন রাস্তা নেই যেখানে কোন মানুষ সুস্থ্য ও স্বাভাবিক চলাচল করতে পারছে। শহরের রাস্তা-ঘাট দেখে মনে হবে যেন যুদ্ধ বিদ্ধস্থ কোন শহর। যে শহরে যেন কোন মানুষ নেই। আছে কিছু যুদ্ধাহত মানুষ। বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙ্গে রড নিয়ে যাচ্ছে। সোলার লাইটগুলো ল্যাম্পপোস্ট থেকে খুলে নিয়ে যাচ্ছে। রাস্তাগুলো কিছুদিন আগে সংস্কার হলেও সেই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে গর্ত হয়ে গেছে। খোয়া উঠে যেতে দেখা যাচ্ছে।
বর্জ ব্যবস্থাপনাগত বিষয়েও মহা অব্যবস্থা বিরাজমান। শহরের বিভিন্ন স্থানে ময়লা ফেলা স্বাভাবিক রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। পৌরসভায় ১০০ জন সুইপার আছে। তাদের মধ্যে বেশ কিছু নারী। এদের অনেকের শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল। তাদের ময়লা ফেলার কোন আধুনিক উপকরণ নেই। এমনকি কোন ট্রেনিংও নেই। তারা এক ঘন্টা কাজ করে। কিন্তু পৌরসভার দূর্বল প্রস্তুতির সুযোগে নাগরিকদেরকে সেবা দিতে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করে সুযোগ করে দিয়েছে।
যা নাগরিক জীবনে বোঝার উপরে শাকের আটি বলে মনে করে। অর্থের বিনিময়ে বর্জ্য অপসারনের সুযোগটি সুচতুর উদ্যোগ যা অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত। পৌর কর্তৃপক্ষ মনে করে নাগরিকরা বর্জ্য ফেলার স্থান নির্ধারণ করে দিবে যদি না দেয় তাহালে তারা ইচ্ছে মাফিক ময়লা ফেলার স্থান নির্ধারণ করবে। স্কুলের সামনে বা কবর স্থানের সামনে। এই অবুজ কাজের ফল জনগণকেই ভোগ করতে হচ্ছে।
এবার আসি জলাবদ্ধতা বিষয়ে- শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃটিশ আমলে বা তারো পূর্ব থেকে শহরকে জলাবদ্ধতা মুক্ত রাখার জন্য অনেকগুলো খাল বিদ্যমান ছিলো। দীর্ঘ অব্যবস্থায় সে খালগুলো পানি সরবরাহ করতে পারছেনা,প্রভাবশালীদের দখল ও ময়লা ফেলে সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে এ কারণে শহরের রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-ঘর, বাগান, ক্ষেত জলমগ্ন হয়ে থাকা যেন অনিবার্য হয়ে পড়ছে। পৌরসভা থেকে জলমগ্নতাদুরীকরণের কোন সময়োপযোগি উদ্যোগ দেখা যাচ্ছেনা। নিয়মিতভাবে যদি সুইপার দিয়ে পরিষ্কার করা হতো তাহলে জনজীবনে এতো দূর্ভোগ হতোনা। বাগেরহাট পৌরসভার অনাচারের মধ্যে সুইপার নিয়োগ অনাচারও উল্লেখযোগ্য।
বাগেরহাট পৌরসভার ইতিহাসে ঐ চেয়ারকে কলংকিত করেছেন যিনি তিনি আর কেউ নন একজন অশিক্ষিত, নীতিবিবর্জিত একজন উগ্র অন্ধ মানুষ। অশিক্ষিত মেয়রকে পরিচালনার জন্য কিছু শিক্ষিত লোক প্রয়োজন ছিলো খান হাবিবুর রহমানের অনির্বাচিত)। তিনি তাদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট করেছিলেন। সেই সিন্ডিকেটের মূল হোতা টি,এম,রেজাউল হক রিজভী, সহকারী প্রকৌশলী। তিনি প্রকৌশলী সাবেক মেয়রের সাথে থেকে উচ্চমূল্যে প্লান পাস, ভবনের উপকরণ সরবরাহ, মিস্ত্রি নিয়োগ সবই তিনি ভবন নির্মাণকারীর উপর চাপিয়ে দিতেন।
তার আচরণ ছিলো মাস্তানদের মতো। প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছেন ।সুন্দরবন অঞ্চলে রিসোর্ট করেছেন।সহকারী প্রকৌশলী রিজভীর ক্ষমতার উৎস ছিলো অবৈধ মেয়র খান হাবিবুর রহমান। তিনি সামান্য নিম্ন বিত্ত থেকে উঠে আসা একজন মানুষ। তিনি ও তার শ্যালক ও আত্মীয়গণ ছিলেন বাগেরহাটের ডন। অঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া লোক। প্রায় বিশটি বাড়ী আছে তাদের এই শহরে। এগুলো হলো সমাজ অসুস্থতার প্রকান্ড একটি উদাহরণ।
শোনা যেত তার মেয়রের প্রতিদিন বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে চাপ দিয়ে কম করে দুই লক্ষ টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অলিখিতভাবে নির্ধারিত ছিলো। এছাড়া ভাউচারের মাধ্যমে বিভিন্ন বাজার খাত দিয়েও কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার সিন্ডিকেটের প্রতিটি সদস্যই যার যার জায়গায় ভয়ংকর রকমের মাফিয়া প্রকৃতির ছিলো। তার ড্রাইভার থেকে শুরু করে প্রকৌশলী পর্যন্ত অনেকেরই নাম পাওয়া যায়। এদের মধ্যে জনাব রিজভীর নামটি বারংবার ফিরে আসে। এই ব্যক্তি প্রভাব খাটিয়ে এখনো দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন।
মূলতঃ মেয়রের রেপ্লিকা হিসেবে তিনি চালিয়ে নিচ্ছেন। এই দানবীয় চতুর ব্যক্তিটি কাকে কিভাবে ম্যানেজ করতে হয় সে ভালোভাবে জানে। আমরা অশংকা করি যে রাস্তাগুলো নির্মাণ হওয়া শুরু হয়েছে সেগুলো পূর্ববর্তী রাস্তাগুলোর মতো হবে। এই ব্যক্তিকে স্বপদে রেখে কখনো বাগেরহাট পৌরসভা সুস্থ হতে পারবেনা।
তাই আমরা মনে করি তার এই পৌরসভায় থাকার আর কোন নৈতিক অধিকার নেই। আমরা এ ক্ষেত্রে অন্য অনেক অসংগতিকে বাদ রেখে শুধুমাত্র এবং একমাত্র সহকারী প্রকৌশলীর অপসারণ একান্তভাবে প্রত্যাশা করি। তাহলে বাগেরহাট ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবে। সংবাদ সম্মেলনে শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।