বিতর্কিত জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মফিজুর রহমান আবারও সদরে

সোহারাফ হোসেন সৌরাভ, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ রাত ০১:৩০, মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

ঠিকাদারের নিকট ঘুষ দাবিসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করার কারনে শাস্তিমুলক বদলী হওয়ার পাঁচ মাসের মধ্যে সেই বিতর্কিত সাতক্ষীরা সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মফিজুর রহমান আবারও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পুনরায় স্ব-পদে যোগদান করায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার অফিস পাড়ায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচা চলছে। অনেকে বলছে তার খুটির জোর কোথায়?
 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঠিকাদার মোঃ সামছুর রহমান বকুলের নিকট গ্রাহক প্রতি ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মফিজুর রহমান। একপর্যায়ে বিষয়টি ঠিকাদার মোঃ সামছুর রহমান বকুল সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানান। এরপর অধিকতর তদন্ত শেষে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত বছরের ২৪ অক্টবর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশল মীর আবু শাহিদের স্বাক্ষরিত এক আদেশে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মফিজুর রহমাকে যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলাতে বদলী করা হয়।
এর পাঁচ মাস পর অর্থাৎ গত ২০ মার্চ ২০২৫ তারিখে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধায়ক প্রকৌশল জামানুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মফিজুর রহমানকে পুনরায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলাতে স্ব-পদে বদলী করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার সর্তে সাতক্ষীরা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দ‘ুজন কর্মচারী জানান, ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা লেন-দেনের বিনিময় উপ-সহকারী মফিজুর রহমান সাতক্ষীরা সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে স্ব-পদে যোগদান করেছেন।
এছাড়া অভিযোগ উঠেছে  সাতক্ষীরা সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মফিজুর রহমান বে-নামে ঠিকাদারী করেন। এর আগে তালা উপজেলায় দায়িত্ব পালনকালে ‘সমগ্রহ দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের‘ অধিনে বহু সংখ্যক গভীর টিউবয়েল বসানো কাজ করেন তিনি নিজেই। অভিযোগ উঠেছে এসব টিউবয়েল যে পরিমান গভীর করে বসানোর কথা তা না করে স্বল্প গভীর করে বসানো হয়। যা থেকে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মফিজুর রহমান। যেটি তদন্ত করলে ধরা পড়বে বলে জানান তালা উপজেলার অনেক ঠিকাদার। তাছাড়[ সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় থাকাকালে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ প্রকল্পের অধিনের ৩০ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্যাঙ্কি দেয়া হয় ইউনিয়ন পর্যায়ে কয়েক হাজার পরিবারকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মফিজুর রহমান জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ট্যাঙ্কি প্রতি তিন হাজার টাকা করে নিয়েছে গ্রাহকদের নিকট থেকে। যা তদন্ত করলে সত্যতা মিলবে। তাছাড়া তালা উপজেলায় থাকাকালে রেইন ওয়াটার হারভেষ্ট প্রকল্পে তিনি নিজেই শতাধিক ট্যাঙ্কি স্থাপনের কাজ করেন। সেখানেও গ্রাহকদের অভিযোগ গতানুগতিক ভাবে ট্যাঙ্কিগুলো বসানো হয়েছে। ট্যাঙ্কির নিচে ১০ ইঞ্চি ইটের গাথুনি বেড়ি করার নিয়ম থাকলেও ৫ ইঞ্চি গাথুনি করা হয়েছে। টিন বা এলবেস্টারের চাল দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি। এমন অসংখ্য অনিয়ম ও দুর্নীতি করার পরও বদলী ঠেকিয়ে বহালতবিয়তে ফিরে এসেছে সাতক্ষীরা। যা সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্নের উদয় হয়েছে। অনেকে বলছেন, ৫ আগষ্ট পরবর্তীতে এমন সরকারী কর্মকর্তা অনিয়ম বা দুর্নীতি করে পার পাচ্ছে কি ভাবে?
এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মফিজুর রহমান ঘুষ-দুর্নীতির বিষয়টি অস্বীকার বলেন কে বা কারা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়