ইতিহাসে প্রথম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী

অনলাইন ডেস্ক || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ সকাল ১০:৩৩, রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রায় দুই দশক পর একটি বড় ধরনের জাতীয় সমাবেশ আয়োজন করতে যাচ্ছে। দলটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ১৯ জুলাই। সমাবেশকে ঘিরে দেশজুড়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ ও প্রস্তুতির ব্যস্ততা।

দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রায় দুই দশক পর একটি বড় ধরনের জাতীয় সমাবেশ আয়োজন করতে যাচ্ছে। দলটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ১৯ জুলাই। সমাবেশকে ঘিরে দেশজুড়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ ও প্রস্তুতির ব্যস্ততা।

জামায়াত সূত্রে জানা গেছে, ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড়’ জাতীয় সমাবেশ হিসেবে চিহ্নিত এই আয়োজনে ১২ থেকে ১৩ লাখ মানুষের অংশগ্রহণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার আশপাশের গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জসহ দুটি মহানগর এলাকা থেকে অন্তত ১০ লাখ এবং দূরবর্তী জেলা থেকে আরও কয়েক লাখ মানুষ অংশ নেবেন বলে দলটির নেতারা আশা করছেন।

দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এরই মধ্যে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি মঞ্চ নির্মাণ, নিরাপত্তা, পানি সরবরাহ, স্যানিটেশনসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার খোঁজখবর নেন এবং সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।

সাত দফা দাবিতে সমাবেশ

জামায়াত জানিয়েছে, সমাবেশে সাত দফা দাবি উপস্থাপন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে:

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের নিশ্চয়তা

জুলাই মাসজুড়ে সংঘটিত গণহত্যার বিচার

রাজনৈতিক সংস্কার

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসন

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন

সংবিধানে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির অন্তর্ভুক্তি

প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ

সমাবেশ সফল করতে এক হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক ও কর্মী দায়িত্ব পালন করবেন। মঞ্চ নির্মাণ, শৃঙ্খলা রক্ষা, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, পানীয় জল, অজু ও নামাজের ব্যবস্থা, অস্থায়ী শৌচাগার, এলইডি স্ক্রিনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে চলছে প্রচার কার্যক্রম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

বিরোধী দলগুলোকে আমন্ত্রণ

জামায়াত সমাবেশটিকে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী সব গণতান্ত্রিক শক্তির মিলনমেলায়’ রূপ দিতে চায়। এ লক্ষ্যে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দল ও সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন দলটির মিডিয়া প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। তিনি বলেন, “আমরা চাই এই সমাবেশ একটি ঐক্যের বার্তা দিক।”

সমাবেশস্থল পরিদর্শন শেষে মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা নির্বাচনের সময় পেছানোর পক্ষে নই। চাই সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন।” তিনি বলেন, দেশে এখনো ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ অনুপস্থিত এবং এই অবস্থায় গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, “আমরা কখনোই নির্বাচন পেছানোর কথা বলিনি। তবে এমন একটি নির্বাচন চাই, যেখানে প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকবে, কোনো ইঞ্জিনিয়ারিং হবে না, কেন্দ্র দখল হবে না।”

উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশে জামায়াতের পাঁচ নেতা অংশ নিলেও সেখানে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। জামায়াতের নেতারা মনে করছেন, সেটি ছিল একটি কৌশলগত ভুল, যা এইবার তারা এড়িয়ে যেতে চায়।

দলীয় নেতাদের আশা, এই সমাবেশের মাধ্যমে জামায়াত রাজনৈতিক অঙ্গনে তাদের পুনঃউপস্থিতি জোরালোভাবে জানান দিতে পারবে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে একটি শক্তিশালী অবস্থান নিতে পারবে।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়