তুঘলকি কাণ্ড যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে
বিশেষ প্রতিনিধি। || বিএমএফ টেলিভিশন
ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও আশপাশের এলাকাবাসীর জন্য পাসপোর্ট সেবা পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। কিন্তু বাস্তবে এই অফিসে সেবা পেতে যেন ‘চ্যানেল ফি’ নামক ঘুষ না দিলে কিছুই হয় না। নির্ধারিত সরকারি ফি জমা দিয়েও মানুষকে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত হাজার হাজার টাকা।
ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও আশপাশের এলাকাবাসীর জন্য পাসপোর্ট সেবা পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম যাত্রাবাড়ী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। কিন্তু বাস্তবে এই অফিসে সেবা পেতে যেন ‘চ্যানেল ফি’ নামক ঘুষ না দিলে কিছুই হয় না। নির্ধারিত সরকারি ফি জমা দিয়েও মানুষকে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত হাজার হাজার টাকা।
সরকার নির্ধারিত ১০ বছরের মেয়াদী, ৪৮ পাতার পাসপোর্টের জন্য ব্যাংকে জমা দিতে হয় ৫৭৫০ টাকা। অথচ বাস্তবে সাধারণ আবেদনকারীদের কাছ থেকে ‘চ্যানেল ফি’ নামে আদায় করা হচ্ছে ১২০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। কেউ কেউ এই ফি না দিলে মাসের পর মাসেও পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন না।
তথ্য সংশোধনের মতো বিষয়ে আরও ভয়াবহ অবস্থা। সংশোধনের ক্ষেত্রে দাবি করা হচ্ছে ২০০০ থেকে সর্বোচ্চ পরিমাণ টাকাও। এসব টাকা মূল অফিসের কাউন্টারে না গিয়ে চলে যাচ্ছে কথিত দালাল বা অফিস-সংশ্লিষ্ট অসাধু ব্যক্তিদের পকেটে।
কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা আবু রায়হান বলেন, “আমি নিয়মমাফিক টাকা জমা দিয়ে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু অফিসে গিয়ে জানতে পারলাম, ১৫০০ টাকা না দিলে আমার ফাইল নাকি ধীরগতিতে চলবে। বাধ্য হয়ে দিতে হয়েছে।”
আরেক নারী অভিযোগ করে বলেন, “ছোট একটা বানান সংশোধনের জন্য ২০০০ টাকা দাবি করেছে। নিয়ম বলতেই ওরা হেসে বলল, ‘এটা বাস্তবের নিয়ম’।"
যাত্রাবাড়ী পাসপোর্ট অফিস ঘিরে এমন দালাল-নির্ভর দুর্নীতি নতুন নয়, তবে দিনে দিনে তা সীমাহীন হয়ে উঠছে। প্রশাসনের নীরবতা ও নজরদারির অভাবে এসব অপকর্ম এখন গা-সওয়া হয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, নির্ধারিত ফি দিয়েও যদি সেবা না মেলে, তাহলে এই সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন কী? সরকার যেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে, সেখানে পাসপোর্ট অফিসে এই তুঘলকি কাণ্ড কেন চলবে?
এ বিষয়ে জরুরি তদন্ত, দায়ীদের শাস্তি এবং দালাল-নির্ভরতা বন্ধে কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা দাবি জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকরা।