'১৯ জুলাই প্রমাণ হবে জনগণ আগামী দিনে কাদের ওপর আস্থা রাখবে'
অনলাইন ডেস্ক || বিএমএফ টেলিভিশন
নিজেদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন না আনলে সংশ্লিষ্টদের পতিত ফ্যাসিবাদীদের ভাগ্যবরণ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
নিজেদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন না আনলে সংশ্লিষ্টদের পতিত ফ্যাসিবাদীদের ভাগ্যবরণ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
রাজধানী গুলশানের একটি মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় গুলশান জোন জামায়াত আয়োজিত এক ইউনিট দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও গুলশান জোন পরিচালক ইয়াছিন আরাফাতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য হেদায়েত উল্লাহ, শূরা সদস্য মাহমুদুর রহমান আজাদ ও মিজানুর রহমান খান প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, জনগণ চায় এমন একটি দল আগামীতে ক্ষমতায় আসুক, যারা দেশ ও জাতির মুক্তি এবং কল্যাণের জন্য কাজ করবে। জামায়াত সে প্রত্যয় নিয়ে দীর্ঘ পরিসরে ময়দানে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা বিগত ৫৪ বছর নানাবিধ জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়ে ময়দান ছাড়া হইনি। আমরা ইসলামী আদর্শ ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে মানুষের সংশোধনের জন্য নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। জাতীয় অর্থনীতিকে মজবুতভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠার জন্য ক্ষমতা বাইরে থেকেও নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আত্মকর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও আমরা ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছি। পতিত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে সীমাহীন জুলুম-নির্যাতনেও আমরা একচুলও লক্ষ্যচুত হয়নি। তিনি আগামী ১৯ তারিখের জামায়াত আহুত জাতীয় সমাবেশের কথা উল্লেখ করে বলেন, ১৯ জুলাই-ই নির্ধারিত হবে আগামীতে দেশের নেতৃত্ব কাদের হাতে থাকবে। তিনি জাতীয় সমাবেশ সফল করতে সকল স্তরের জনশক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, যারা দেশের মানুষকে বিদেশে পাঠাতে চায় তারা দিল্লির ও হাসিনার গোলাম এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই তাদেরকে এ অশুভ বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই শপথ নিতে হবে তারা আর কখনো চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি আর দুর্নীতি করবে না। দেশপ্রেমী জনতা এসব আর দেখতে চায় না। তারা ঐক্যবদ্ধ ইসলামী শক্তির নেতৃত্বে এক নতুন বাংলাদেশ দেখতে চায়। যেখানে আইনের শাসন ও সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত হবে। মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। তিনি সে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য ময়দানে আপোষহীন থাকার আহ্বান জানান।
মহানগরী উত্তর আমীর বলেন, জুলাই বিপ্লবীরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাই তাদেরকে জাতীয় বীরের মর্যাদা দিতে। শহীদ পরিবারের প্রতি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন করতে হবে। জুলাই সনদকে সংবিধানে সংযোজন করতে হবে। কোনো ভাবেই চাঁদাবাজ বা সন্ত্রাসীদের প্রতি দয়া দেখানো যাবে না।অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি তাদের প্রতি দয়া দেখায় তাহলে জনগণ তাদেরকে আর কোন ভাবেই সমর্থন করবে না।
তিনি রাষ্ট্রীয় সংস্কারের প্রতি তাগিদ দিয়ে বলেন, বর্তমান প্রশাসন দিয়ে কোন ভাবেই নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। যারা প্রশাসনে বসে দলবাজি করছেন তাদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে অবসরে পাঠাতে হবে। জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় সংস্কার করতে হবে। ঐকমত্য না হলে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের মতামত নিতে হবে। একই সাথে হেফাজত, আল্লামা সাঈদীর রায়ের সময়, বিডিআর, ২৮ অক্টোবর ও জুলাই গণহত্যাকারীদের প্রত্যেকই বিচারের আওতায় আনতে হবে। ট্রাইব্যুনালে না হলে সাধারণ আদালতেই এদের বিচার করতে হবে। জামায়াতের ৭ দফার পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি দেশে আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। অন্যথায় মানুষের তৈরি আইন দিয়ে মানুষের মুক্ত কোন ভাবেই সম্ভব নয়।