রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী নবী হোসেন গ্রুপের ৪ সদস্য আটক, বিদেশি অস্ত্র ও ১৪ লাখ টাকা উদ্ধার
উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি। || বিএমএফ টেলিভিশন
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে সেনাবাহিনী ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)-এর যৌথ অভিযানে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও কুখ্যাত ডাকাত নবী হোসেন গ্রুপের ৪ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। অভিযানে একটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র (উজিআই-এসএমজি) ও নগদ ১৪ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে সেনাবাহিনী ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)-এর যৌথ অভিযানে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও কুখ্যাত ডাকাত নবী হোসেন গ্রুপের ৪ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। অভিযানে একটি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র (উজিআই-এসএমজি) ও নগদ ১৪ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উখিয়ার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি-৬ ব্লকের মাঝি কেফায়েত উল্লাহর বাড়িতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে আটক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা সবাই আলোচিত নবী হোসেন গ্রুপের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে যৌথ বাহিনী।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (৮-এপিবিএন) অতিরিক্ত ডিআইজি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি প্রতিবেদক কে জানান, “আটককৃতরা হলেন, ১১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ই-ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইউসুফের ছেলে মোহম্মদ আনাস (৩০), ৯ নম্বর শিবিরের ব্লক সি-১৪ এর বাসিন্দা নুর বশরের ছেলে মনসুর আহমেদ (৩২), একই ক্যাম্পের ব্লক সি-১৬ এর বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন এর ছেলে ইয়াসের আরাফাত (৩৫) এবং ১১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ব্লক সি-৬ এর বাসিন্দা সৈয়দ আহমেদ এর ছেলে কেফায়েত উল্লাহ (৩৫)।”
তিনি বলেন, “অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্রটি উজিআই সাবমেশিন গান, যা সাধারণত মিয়ানমার সেনাবাহিনী ব্যবহার করে থাকে। অস্ত্রটি ক্যাম্প ৮ ইস্টে অবস্থিত নবী হোসেন গ্রুপের সন্ত্রাসী আস্তানায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।”
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানান, তারা গোপন বৈঠক করে অস্ত্র ব্যবসায়ী ইলিয়াস-এর কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহের জন্য ওই স্থানে মিলিত হয়েছিল। যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে ইলিয়াস পালিয়ে গেলেও নবী হোসেন গ্রুপের অপর চার সদস্যকে আটক করা সম্ভব হয়।
ক্যাম্পে আতঙ্কের নাম নবী হোসেন:
উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এখন আতঙ্কের নাম নবী হোসেন। তিনি বর্তমানে মিয়ানমারভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ)-এর কমান্ডার হিসেবে কাজ করছেন। একইসাথে তিনি রোহিঙ্গা কমিটি ফর পিস অ্যান্ড রেপাট্রিয়েশন (আরসিপিআর)-এর প্রধান দিল মোহাম্মদের অধীনে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
২০২৩ সালে নবী হোসেন মিয়ানমারের চাকমাকাটা সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং অল্প সময়েই ক্যাম্প এলাকায় ভয়ঙ্কর এক সন্ত্রাসী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। বর্তমানে তিনি ক্যাম্প ৮ ইস্টে একটি ৬০ ফুট লম্বা ও ২০ ফুট প্রস্থের পাকা বাসস্থান নির্মাণ করেছেন, যা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নির্মিত হয়েছে। এটি তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তার নেতৃত্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অস্ত্রের মহড়া, চাঁদাবাজি, মাদক পাচার ও সহিংস তৎপরতা দিনদিন বেড়ে চলেছে, যার ফলে সাধারণ রোহিঙ্গারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আরিফ হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,“অভিযানে নবী হোসেন গ্রুপের চারজনকে অস্ত্র ও নগদ টাকাসহ আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”