ক্রুড অয়েল রপ্তানি: অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনা
বিএমএফ টেলিভিশন ডেস্ক || বিএমএফ টেলিভিশন
ধানের কুঁড়া থেকে উৎপাদিত ক্রুড অয়েল এখন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এ তেলের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও সম্প্রতি রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপকে ব্যবসায়ীরা অযৌক্তিক বলে অভিহিত করছেন। তাদের মতে, রপ্তানি অব্যাহত থাকলে একদিকে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য পাবে, অন্যদিকে শিল্পও টিকে থাকবে।
ধানের কুঁড়া থেকে উৎপাদিত ক্রুড অয়েল এখন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এ তেলের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও সম্প্রতি রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপকে ব্যবসায়ীরা অযৌক্তিক বলে অভিহিত করছেন। তাদের মতে, রপ্তানি অব্যাহত থাকলে একদিকে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য পাবে, অন্যদিকে শিল্পও টিকে থাকবে।
বাংলাদেশে ২০০৯ সালে রাইস ব্রান অয়েল মিল চালু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় বাজারে তেমন সাড়া মেলেনি। একসময় অনেক মিল টিকে থাকার সংকটে পড়ে। সেই প্রেক্ষিতে রপ্তানিই হয়ে ওঠে শিল্পের মূল ভরসা। বর্তমানে দেশের উৎপাদন স্থানীয় চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় চলতি বছরের শুরুতে রপ্তানি ব্যাহত হওয়ার কারনে এ শিল্প মালিকরা বড় ক্ষতির সম্মুখূন হয়েছে। ৯০% অয়েল মিল মালিক চাই রপ্তানী অব্যাহত থাক।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে ক্রুড অয়েল রপ্তানি থেকে আয় হয় ১৫৭.৬১ মিলিয়ন ডলার, যা পরের বছর বেড়ে দাঁড়ায় ১৮২.৮২ মিলিয়ন ডলারে। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসেই রপ্তানি হয় প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার টন, যার মাধ্যমে আয় আসে প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন ডলার। বর্তমানে খাতটি থেকে প্রতিবছর গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৪.৪ মিলিয়ন টন ক্রুড অয়েল উৎপাদিত হয়। এ থেকে সর্বোচ্চ ৮.৮ লাখ টন খাঁটি তেল উৎপাদন সম্ভব। অনেক অয়েল মিল বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছে এই তেলের বাজারজাত করতে কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ রাইস ব্রান অয়েল খেতে চাইনা। তাই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ক্রুড অয়েল রপ্তানির ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের ফিড মিল গুলোতে ক্রুড অয়েল ও রিফাইন্ড অয়েল এর চাহিদা খুব কম। রাইস ব্রান হতে উৎপাদিত ডি ও আর বি উপজাত প্রাণী ও মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে আরও কয়েকশ’ মিলিয়ন ডলার বাঁচানো যাবে।
বর্তমানে গুটি কয়েক মিল সামান্য পরিমান রিফাইন তেল টিসিবিতে সরবরাহ করছে। তারাই মূলত রপ্তানীতে প্রতিবদ্ধক হয়ে দাড়িয়েছে বলে কেউ কেউ মনে করছে। দেশের প্রায় ৯৫% রাইস মিল মালিকরা চাচ্ছে যে ক্রুড অয়েল রপ্তানী হোক। এতে তারা ব্রানের ন্যয্য মূল্য পাবে। তারা সাচ্ছন্দে রাইস মিল চালাতে সক্ষম হবে বলে তাদের অভিমত।
তবে শিল্পের সামনে রয়েছে কিছু বড় চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যে ২৫% রপ্তানি শুল্ক, আধুনিক রিফাইনারি সুবিধার অভাব এবং ভোক্তা সচেতনতার ঘাটতি প্রধান। শিল্প মালিকরা বলছেন, যদি সরকারি সহায়তা, প্রণোদনা এবং আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
ক্রুড অয়েল রপ্তানি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের খাতে পরিণত হবে। এতে কৃষি, শিল্প ও সামগ্রিক অর্থনীতি হবে আরও শক্তিশালী ও গতিশীল।