যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আজ রাত থেকে কার্যকর
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিএমএফ টেলিভিশন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশি পণ্যের ওপর নতুন ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। এই শুল্ক আজ বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত থেকে কার্যকর করতে যাচ্ছে। এতে বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য নতুন কিছু সুযোগ তৈরি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশি পণ্যের ওপর নতুন ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। এই শুল্ক আজ বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত থেকে কার্যকর করতে যাচ্ছে। এতে বৈশ্বিক বাণিজ্যের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য নতুন কিছু সুযোগ তৈরি হতে পারে।
এই শুল্ক কার্যকর হলে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের ওপর মোট শুল্ক ৩৫ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হবে।
যদিও এটি প্রতিযোগিতায় প্রভাব ফেলতে পারে, তবু শিল্প-নেতারা মনে করছেন এটি বাংলাদেশের উৎপাদন সক্ষমতা প্রমাণ করার একটি সুযোগ। কারণ বাজারে থাকা অন্য প্রতিযোগীদের ওপরও উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারে। যুক্তরাষ্ট্র এখনো বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় একক রপ্তানি গন্তব্য।
হোয়াইট হাউস থেকে গত ৩১ জুলাই জারি করা নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, নতুন শুল্ক চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আজ রাত ১২টা ১ মিনিটের পর পাঠানো সব চালানের ওপর প্রযোজ্য হবে। এর আগে পাঠানো চালানগুলো এই বাড়তি শুল্কের আওতায় পড়বে না।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, 'যখন ট্রাম্প প্রশাসন এপ্রিলে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল, তখন পশ্চিমা ক্রেতারা দাম ৫ থেকে ১০ শতাংশ কমানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনার পর এখনো দর কষাকষির চাপ দেখা যায়নি।'
তিনি বলেন, সাধারণত পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে ২৮ থেকে ৩৫ দিন সময় লাগে, ফলে আজ রাতের পর যেসব চালান চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়বে, সেগুলো নতুন শুল্ক কাঠামোর আওতায় পড়বে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ২০ শতাংশ শুল্ক আদর্শ না হলেও, ৩৫ শতাংশের তুলনায় এটি ভালো। তিনি জানান, বিশেষ করে নিটওয়্যারে, যেখানে ৮০ শতাংশেরও বেশি ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান এখনো শক্তিশালী। তিনি বলেন, 'সময়মতো অর্থ পরিশোধ ও নৈতিক ব্যবসায়িক আচরণের জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক সুনাম রয়েছে।'
তবে তিনি উল্লেখ করেন, পারস্পরিক শুল্ক সমন্বয় বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি।
বাংলাদেশের রপ্তানির একক বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, দেশটিতে গত অর্থবছরে ৮৭৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৭৬০ কোটি ডলার। এত দিন বাংলাদেশের পণ্যে কার্যকর গড় শুল্কহার ছিল ১৫ শতাংশ। তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে গড় কার্যকর শুল্কহার ছিল ১৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ। নতুন করে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক যুক্ত হয়ে গড় কার্যকর শুল্কহার আরও বাড়বে। তবে শুল্কহার বাড়লেও বাংলাদেশের বড় প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের সমানই রয়েছে। আবার চীন ও ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের শুল্কহার কম। সব মিলিয়ে নতুন পাল্টা শুল্কে বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতায় থাকা কিংবা অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকার কথা বলছেন রপ্তানিকারকেরা।