আসিয়ান থেকে শ্রমিক পাচ্ছে না, বাংলাদেশের কথা ভাবছে জাপান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:৪৩, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

জাপান দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে বিদেশি কর্মী সংগ্রহের উৎস হিসেবে বিবেচনা করছে। এই তালিকায় আছে বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের নামও। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে অর্থনৈতিক উন্নতির কারণে সেখানকার কর্মীরা বিদেশে কাজ করতে কম আগ্রহী হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান।

জাপান দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে বিদেশি কর্মী সংগ্রহের উৎস হিসেবে বিবেচনা করছে। এই তালিকায় আছে বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের নামও। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে অর্থনৈতিক উন্নতির কারণে সেখানকার কর্মীরা বিদেশে কাজ করতে কম আগ্রহী হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাপান।

জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়ার খবরে বলা হয়েছে, জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও উজবেকিস্তানের মতো দেশগুলোর এজেন্সিগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি বেসরকারি সংস্থা নিয়োগ করবে। তারা জাপানের শ্রমের চাহিদা ও প্রাতিষ্ঠানিক বাধাগুলো পর্যালোচনা করবে।

নার্সিং, খাদ্য সেবা ও নির্মাণের মতো কর্মী-স্বল্প খাতে আরও বিদেশি শ্রমিক আকর্ষণ করার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নিচ্ছে জাপান। দেশটির ওনোদেরা গ্রুপের উচ্চমানের সুশি রেস্তোরাঁয় প্রশিক্ষণ দেওয়া ওনোদেরা ইউজার রান গত মাসে উজবেকিস্তানের মাইগ্রেশন এজেন্সির সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সংস্থাটি জাপানে কাজ করতে আগ্রহী তরুণদের জন্য একটি প্রোগ্রাম শুরু করবে, যেখানে তাদের ছয় মাস পর্যন্ত জাপানি ভাষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং নির্দিষ্ট দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমিকের পরীক্ষায় পাস করলে জাপানে নিয়ে যাওয়া হবে। তারা প্রতি বছর প্রায় ২০০ জনকে রেস্তোরাঁ ও নার্সিং খাতে প্রশিক্ষণ দেবে।

জাপান-চীন-এশিয়া এডুকেশনাল মেডিকেল কালচারাল এক্সচেঞ্জ নামের একটি সংস্থা জাপানে পড়াশোনা করতে আগ্রহী বিদেশি শিক্ষার্থীদের সহায়তা করে। তারাও এপ্রিলে উজবেকিস্তানে তিনটি জাপানি ভাষা শিক্ষা কেন্দ্র খুলেছে। চেইন রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠান ওয়াতামি বাংলাদেশে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করবে। তাদের লক্ষ্য প্রতি বছর ৩ হাজার জনকে জাপানে নির্দিষ্ট দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমিক হিসেবে পাঠানো।

এখন পর্যন্ত দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলো থেকে জাপানে তুলনামূলক কম শ্রমিক গেছে। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত জাপানের টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ও নির্দিষ্ট দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমিক প্রোগ্রামে ভারতের ১ হাজার ৪২৭ জন, শ্রীলঙ্কার ৪ হাজার ৬২৩ জন এবং উজবেকিস্তানের ৩৪৬ জন নিবন্ধিত ছিল।

তবে এসব দেশ থেকে শ্রমিকের সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। জাপানের শ্রম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ভারতের মোট কর্মীবাহিনী ছিল ৪৯২ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন এবং প্রতি বছর ১০ মিলিয়নের বেশি বাড়ছে। সেখানে ১৫-২৪ বছর বয়সীদের বেকারত্বের হার ২০২৩ সালে ১৫ দশমিক ৮ শতাংশ ছিল। বাংলাদেশ থেকে ডিসেম্বরে জাপানে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ও নির্দিষ্ট দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমিকের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে ২ হাজা ১৭৭ জন হয়েছে।

ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত জাপানে প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার বিদেশি নাগরিক টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং ও নির্দিষ্ট দক্ষতাসম্পন্ন শ্রমিক প্রোগ্রামের অধীনে ছিল। এর মধ্যে ভিয়েতনামিদের সংখ্যাই প্রায় অর্ধেক, ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬১৯ জন।

২০১৩ সালে চীনের মাথাপিছু জিডিপি ৭ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখান থেকে টেকনিক্যাল ইন্টার্নের সংখ্যা কমতে শুরু করে। ডিসেম্বর পর্যন্ত জাপানে চীনা টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ছিল মাত্র ২৫ হাজার ৯৬০ জন।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়