৯৭ শতাংশ মুসলিম ভোটার মামদানিকে ভোট দিয়েছেন
আন্তর্জাতিক ডেক্স। || বিএমএফ টেলিভিশন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম ভোটাররা বিগত ৪ নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীদের পক্ষে ব্যাপকভাবে ভোট দিয়েছেন। একটি নতুন বুথফেরত জরিপের তথ্য থেকে জানা গেছে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির প্রতি বাড়তে থাকা ক্ষোভের মধ্যেই এই প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম ভোটাররা বিগত ৪ নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীদের পক্ষে ব্যাপকভাবে ভোট দিয়েছেন। একটি নতুন বুথফেরত জরিপের তথ্য থেকে জানা গেছে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির প্রতি বাড়তে থাকা ক্ষোভের মধ্যেই এই প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
গতকাল সোমবার (১০ নভেম্বর) মার্কিন সংস্থা ‘কাউন্সিল অন আমেরিকান–ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর)’–এর ওই জরিপ প্রকাশিত হয়। জরিপে দেখা গেছে, নিউইয়র্কে নবনির্বাচিত মেয়র ও ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট জোহরান মামদানিকে মুসলিম ভোটারদের ৯৭ শতাংশ সমর্থন দিয়েছেন। জরিপ অনুযায়ী, ভার্জিনিয়ার ডেমোক্রেটিক মুসলিম সিনেটর গাজালা হাশমি লেফটেন্যান্ট গভর্নর পদে নির্বাচনে মুসলিম ভোটের ৯৫ শতাংশ পেয়েছেন।
সিএআইআরের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মুসলিম ভোটাররা শুধু মুসলিম প্রার্থীদেরই নয়, বরং তুলনামূলকভাবে ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যপন্থী অমুসলিম প্রার্থীদেরও ব্যাপকভাবে সমর্থন জানিয়েছেন। জরিপে দেখা গেছে, গভর্নর নির্বাচনে জয়ী ডেমোক্রেটিক পার্টির দুই নারী কংগ্রেস সদস্য ভার্জিনিয়ার অ্যাবিগেইল স্প্যানবার্গার ও নিউ জার্সির মিকি শেরিল মুসলিম ভোটারদের প্রায় ৮৫ শতাংশের সমর্থন পেয়েছেন।
এছাড়া ক্যালিফোর্নিয়ায় ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে অনুকূল নতুন কংগ্রেশনাল মানচিত্র অনুমোদন করা ‘প্রস্তাব ৫০’ মুসলিম ভোটারদের ৯০ শতাংশের সমর্থন পেয়েছে। সিএআইআর জানিয়েছে, এ জরিপের জন্য তারা ১ হাজার ৬২৬ জন মুসলিম ভোটারের সাক্ষাৎকার নিয়েছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, জরিপের ফলাফল থেকে মুসলিম ভোটারদের উচ্চমাত্রার অংশগ্রহণের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এক বিবৃতিতে সংস্থা বলেছে, ‘এই বুথফেরত জরিপের ফলাফল এক উৎসাহব্যঞ্জক সত্য তুলে ধরেছে—মার্কিন মুসলিমরা এখন নিজেদের তুলে ধরছেন, মত প্রকাশ করছেন, আর আমাদের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলছেন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘চারটি অঙ্গরাজ্যে মুসলিম ভোটাররা ভোটের প্রক্রিয়ায় অসাধারণ আগ্রহ ও অঙ্গীকারের পরিচয় দিয়েছেন। তারা এমন ভোট দিয়েছেন, যা মার্কিন সমাজে সক্রিয় নাগরিক হিসেবে তাদের ক্রমবর্ধমান ভূমিকা প্রতিফলিত করে।’
বর্তমান কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ নির্ধারণ করবে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচন। এর এক বছর আগে অনুষ্ঠিত ৪ নভেম্বরের নির্বাচন ডেমোক্র্যাটদের জন্য একধরনের প্রাথমিক সাফল্য এনে দিয়েছে। তবে নিউইয়র্কে এ নির্বাচনের সময় ইসলামবিরোধী বক্তব্য বেড়ে যায়; বিশেষ করে রিপাবলিকান রাজনীতিক ও বিশ্লেষকদের মধ্যে। এ শহরের মেয়র নির্বাচনে ট্রাম্প সাবেক ডেমোক্র্যাট গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
সিএআইআর বলেছে, মুসলিম ভোটাররা ‘ইসলামবিদ্বেষের মুখেও’ নিজের ও প্রতিবেশীদের জন্য ভালো ভবিষ্যৎ গড়তে উঠে দাঁড়াচ্ছেন। এর মধ্য দিয়ে তারা প্রমাণ করছেন যে ‘দেশের শক্তি নির্ধারণে অংশগ্রহণই মুখ্য বিষয়, কোনো পক্ষপাত মুখ্য নয়।’
জরিপের ফলাফল আরও দেখায়, গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইসরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থন দেওয়ার কারণে কিছু মুসলিম ভোটার যেভাবে ডেমোক্র্যাটদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন, তারা এখন আবার দলে ফিরছেন।
সিএআইআর জানিয়েছে, ৪ নভেম্বরের নির্বাচনে ৭৬ জন মুসলিম প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, তাদের মধ্যে ৩৮ জন বিজয়ী হয়েছেন।
মিশিগানের ডেট্রয়েটের হ্যামট্রামিক, ডিয়ারবর্ন ও ডিয়ারবর্ন হাইটসে মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া আগামী বছরের কংগ্রেস নির্বাচনে বেশ কয়েকজন মুসলিম প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন আবদুল এল–সায়েদও। তিনি মিশিগান থেকে মার্কিন সিনেটের আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।