হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে ৫০ ভারতীয়কে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেক্স। || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:০৬, সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ১১ কার্তিক ১৪৩২
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

অবৈধভাবে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল রোববার (২৭ অক্টোবর) ভোরে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী প্রায় ৫০ তরুণকে এভাবে দেশে পাঠানো হয়। তাদের বেশির ভাগই হরিয়ানা, পাঞ্জাব, গুজরাট ও গোয়ার বাসিন্দা। তারা ‘ডানকি রুট’ নামে পরিচিত বিপজ্জনক মানবপাচারের পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন।

অবৈধভাবে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল রোববার (২৭ অক্টোবর) ভোরে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী প্রায় ৫০ তরুণকে এভাবে দেশে পাঠানো হয়। তাদের বেশির ভাগই হরিয়ানা, পাঞ্জাব, গুজরাট ও গোয়ার বাসিন্দা। তারা ‘ডানকি রুট’ নামে পরিচিত বিপজ্জনক মানবপাচারের পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রে উন্নত জীবনের আশায় জমি বিক্রি, ঘর বন্ধক রেখে এবং এজেন্টদের বিশ্বাস করে দেশ ছেড়েছিলেন এসব তরুণ। তাদের সেই আশা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। অবৈধভাবে বসবাস করার অভিযোগে তাদের হাতে হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

ফেরত আসা এসব তরুণের অনেকের দাবি, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর পদক্ষেপে ধরা পড়ার পর ঋণের বোঝায় ডুবে গেছেন তারা।

হরিয়ানার কর্মকর্তাদের মতে, ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের মধ্যে ১৬ জন কারনালের, ১৪ জন কাইথালের, ৫ জন কুরুক্ষেত্রের ও ১ জন পানিপথের বাসিন্দা। তারা সবাই দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার মধ্য দিয়ে মানব পাচারের ‘ডানকি রুট’ হিসেবে পরিচিত পথ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। তাদের কেউ কেউ সেখানে কয়েক বছর ছিলেন, আবার কেউ মাত্র কয়েক মাস। ফেরত পাঠানোর আগে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে কারাভোগও করতে হয়েছিল।

ADVERTISEMENT
ফেরত আসা ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে ছিলেন কারনালের রাহরার অঙ্কুর সিং (২৬)। তিনি বলেন,২০২২ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে তার ২৯ লাখ রুপি খরচ হয়। দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ পেরোতে সময় লাগে চার মাস। তিনি বলেন, আমি ‘ডানকি রুট’ হয়ে গিয়েছিলাম। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি মদের দোকানে কাজ করার সময় ধরা পড়ি। কয়েক মাস আটক থাকার পর ২৪ অক্টোবর আমাকে ফেরত পাঠানো হয়।

অঙ্কুর জানান, ওই ফ্লাইটে হরিয়ানার প্রায় ৫০ জন ছাড়াও পাঞ্জাব, হায়দরাবাদ, গুজরাট ও গোয়ার তরুণরাও ছিলেন।

কারনালের পোপরা গ্রামের হুসন (২১) ছিলেন তিন বোনের একমাত্র ভাই। দ্বাদশ শ্রেণি পাস করার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেন। তার কাকা সুরেন্দর সিং বলেন, এজেন্টদের ৪৫ লাখ রুপি দিতে আমাদের তিন একর জমি বিক্রি করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই হুসন ধরা পড়ে। রোববার রাত ১টার দিকে দিল্লিতে তাঁরা ফিরেছেন—হাতে হাতকড়া, পায়ে বেড়ি পরানো অবস্থায়।

কাইথালের তারাগড় গ্রামের নরেশ কুমার বলেন, ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারি দিল্লি থেকে রওনা দিয়ে ব্রাজিল হয়ে ৬৬ দিনে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাই। আমাকে প্রতারণা করে ৫৭ লাখ ৫০ হাজার রুপি নিয়েছে এজেন্টরা। প্রথমে ৪২ লাখ বললেও পরে আরও টাকা দাবি করে। শেষ পর্যন্ত এক একর জমি বিক্রি করতে হয়েছে, ঋণও নিতে হয়েছে।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ মাস কারাভোগ শেষে তাকে ফেরত পাঠানো হয়।

কাইথালের পুলিশ সুপার উপাসনা জানিয়েছেন, জেলার ১৪ জন তরুণকে রোববার দুপুরে দিল্লি থেকে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন স্থানীয় আদালতের পরোয়ানাভুক্ত আসামিও ছিলেন।

জিন্দ জেলার এসপি কুলদীপ সিং বলেন, তার জেলা থেকেও তিনজন তরুণ ফেরত এসেছেন। তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, ডানকি রুট’ দিয়ে বিদেশে যাওয়া গুরুতর অপরাধ। এতে পরিবার নিঃস্ব হয়, অনেকেই পথে প্রতারণা, নির্যাতন ও মৃত্যুর মুখে পড়ে।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়