ইসরায়েলকে বয়কট করছে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক। || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:৫৫, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলার প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও একাডেমিক সংস্থা ইসরায়েলি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছে। তাদের অভিযোগ, ইসরায়েলি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারের দমনমূলক নীতির সঙ্গে জড়িত। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৬৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং সেখানকার অনেক এলাকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। এই মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক শিক্ষাঙ্গনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এক নীরব প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে।

গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলার প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও একাডেমিক সংস্থা ইসরায়েলি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছে। তাদের অভিযোগ, ইসরায়েলি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারের দমনমূলক নীতির সঙ্গে জড়িত। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৬৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং সেখানকার অনেক এলাকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। এই মানবিক বিপর্যয়ের প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক শিক্ষাঙ্গনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এক নীরব প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে।

গত বছর ব্রাজিলের ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অব সিয়ারা ইসরায়েলের সঙ্গে একটি যৌথ সম্মেলন বাতিল করে। এরপর থেকে নরওয়ে, বেলজিয়াম এবং স্পেনের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় একই পথে হেঁটে ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এ বছর ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিনও একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। সম্প্রতি আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয় জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাদের শিক্ষার্থী বিনিময় কর্মসূচি বাতিল করে দিয়েছে। একই সঙ্গে ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব সোশ্যাল অ্যানথ্রোপলজিস্টস (ইএএসএ) ঘোষণা করেছে যে তারা আর কোনো ইসরায়েলি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করবে না।

এই বয়কট কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। রয়্যাল সোসাইটির সাবেক সভাপতি ও নোবেল বিজয়ী ভেনকি রামাকৃষ্ণান মনে করেন, এই বয়কটের ফলে সরকারের বিরোধী মতাদর্শী ইসরায়েলি শিক্ষাবিদরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তিনি বলেন, “গাজায় ইসরায়েলের হামলা ‘অত্যন্ত মাত্রাতিরিক্ত’, তবে বয়কটের ফলে এমন সব ইসরায়েলি শিক্ষাবিদও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, যাঁরা নিতান্তই সরকারের বিরোধী।”

অন্যদিকে, ইসরায়েলের ইতিহাসবিদ ইলান পাপ্পে এই বয়কটের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সামরিক দখলদারিত্ব ও দমনমূলক ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাঁর মতে, এই বয়কট ইসরায়েলি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করবে।

ইউরোপের অন্যান্য দেশে বয়কট ছড়িয়ে পড়লেও যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনো কোনো পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করছে। ইউনিভার্সিটিজ ইউকে (ইউইউকে) নামের একটি সংস্থা জানিয়েছে, তারা একাডেমিক বয়কটের বিরোধী; কারণ এটি একাডেমিক স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ। একই মত প্রকাশ করেছে রয়্যাল সোসাইটিও।

ইসরায়েলি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন গবেষণা তহবিলের ক্ষেত্রে বড় ধরনের চাপের মুখে রয়েছে। ইউরোপীয় কমিশন সামরিক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে এমন প্রকল্পগুলোয় ইসরায়েলের অংশগ্রহণ সীমিত করার প্রস্তাব দিয়েছে। এর ফলে ইসরায়েলের গবেষণা অনুদান ইতিমধ্যেই কমতে শুরু করেছে। ইসরায়েলি সরকার ২২ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ করেছে একাডেমিক বয়কট মোকাবিলায়। গবেষণা তহবিল বন্ধ হয়ে গেলে ইসরায়েল থেকে শীর্ষ গবেষকদের বিদেশে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা দেশটির প্রযুক্তি ও চিকিৎসা খাতের জন্য বড় ক্ষতি হতে পারে।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়