রাকসু নির্বাচনে শিবিরের চমক: প্যানেলে নারী, সমন্বয়ক ও সংখ্যালঘু
ডেস্ক রিপোর্ট। || বিএমএফ টেলিভিশন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। এতে ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে প্যানেলে তারা শুধু নিজেদের সংগঠনের নেতাকর্মীদেরই নয়, যুক্ত করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন সাবেক আন্দোলন সমন্বয়ক, নারী শিক্ষার্থী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকেও।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। এতে ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে প্যানেলে তারা শুধু নিজেদের সংগঠনের নেতাকর্মীদেরই নয়, যুক্ত করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন সাবেক আন্দোলন সমন্বয়ক, নারী শিক্ষার্থী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিকেও।
আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে রাকসু নির্বাচন। এ উপলক্ষে গত ৭ সেপ্টেম্বর ছাত্রশিবির প্যানেল ঘোষণা করে।
শীর্ষ দুই পদের প্রার্থী ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে প্রার্থী হয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মোস্তাকুর রহমান। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে লড়বেন ফাহিম রেজা, যিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
এছাড়া সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে মনোনয়ন পেয়েছেন সালমান সাব্বির, যিনি ‘সোচ্চার স্টুডেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি।
নারী ও সংখ্যালঘু প্রতিনিধি
শিবির সমর্থিত এই প্যানেলে তিনজন নারী প্রার্থী রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি নির্ধারিত নারী পদে, আর একটি পদে (সহ–সমাজসেবা সম্পাদক) নারী প্রার্থী রয়েছে। নির্বাহী সদস্য পদে একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়াও জুলাই আন্দোলনে এক চোখ হারানো দ্বীপ মাহবুবও রয়েছেন এই প্যানেলে, যিনি এর আগে আন্দোলনের কেন্দ্রীয় চিত্র হয়ে উঠেছিলেন।
অন্তর্ভুক্তির রাজনীতি
ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই নির্বাচনে সংগঠনের বাইরের শিক্ষার্থীদেরও প্যানেলে জায়গা দিয়েছে। তাদের দাবি, দক্ষ, সচেতন এবং পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের নিয়ে দল গঠন করাই তাদের লক্ষ্য ছিল। এই বৈচিত্র্যময় প্যানেলই তাদের শক্তির জায়গা বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।
আত্মপ্রকাশের পর প্রথমবার
অনেক শিক্ষার্থীর চোখে এই প্যানেল কিছুটা চমকও তৈরি করেছে। কারণ, যারা এতদিন ‘শিবিরের পরিচয়ে গোপনে’ ছিলেন, এবার তারা প্রকাশ্যে এসেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সালমান সাব্বির ও ফাহিম রেজা—দুজনই আগে নিজেদের ‘নিরপেক্ষ’ বা ‘আন্দোলনকেন্দ্রিক’ হিসেবে পরিচিত করতেন।
শিবিরের নেতাদের দাবি, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর তারা আত্মগোপন থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং খোলাখুলি সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছে।
শিবিরের জন্য ভোট বিভাজনের সুবিধা?
ক্যাম্পাসে আলোচনা রয়েছে, রাকসু নির্বাচনে যত বেশি প্যানেল দাঁড়াবে, ততই ভোট ভাগাভাগি হবে। এর ফলে সুসংগঠিত ভোটব্যাংক থাকায় ছাত্রশিবির সুবিধা পেতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত নয়টি প্যানেল ঘোষণা হয়েছে। আরও দুটি প্যানেলও প্রকাশের অপেক্ষায় আছে। এই পরিস্থিতিকে অনেকেই শিবিরের জন্য একটি ‘কৌশলগত অনুকূলতা’ হিসেবে দেখছেন।
ছাত্রী হল ও শিবির-সংঘঠনের প্রভাব
ছাত্রশিবিরের প্যানেলে মহিলাবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন ইসলামী ছাত্রী সংস্থার বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভানেত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলগুলোতে এই সংস্থার প্রভাব রয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের ভাষ্য। তারা বলছেন, ইতিমধ্যেই ছাত্রীদের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট জনবল গড়ে তোলা হয়েছে।
শিবিরের নেতারা ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সাধারণ সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। এর ফলে প্যানেলের বাইরের অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গেও তাদের যোগাযোগ ও সম্পর্ক রয়ে গেছে। ফলে ভোটারদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার সহজ হতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।