শেখ পরিবারের নাম না থাকায় বাগেরহাটের রামপালে শতবর্ষী পেড়িখালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ থেকে বঞ্চিত
আবু-হানিফ,বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ || বিএমএফ টেলিভিশন
শুধুমাত্র শেখ পরিবারের নামে পেড়িখালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির নাম না থাকায় বৈষম্যের শিকার হয়েছে প্রায় শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। রামপাল উপজেলায় শিক্ষাদীক্ষা এগিয়ে থাকা শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ আজ চরম বৈষম্যের শিকার। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে চরম ক্ষোভ দীর্ঘ দিনের।
শুধুমাত্র শেখ পরিবারের নামে পেড়িখালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির নাম না থাকায় বৈষম্যের শিকার হয়েছে প্রায় শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। রামপাল উপজেলায় শিক্ষাদীক্ষা এগিয়ে থাকা শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ আজ চরম বৈষম্যের শিকার। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে চরম ক্ষোভ দীর্ঘ দিনের।
জানা গেছে, ১৯৩৯ সালে পেড়িখালী পি, ইউ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে এ ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠের যাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে গত ৯৪ বছর ধরে সুনামের সাথে এর পথ চলা শুরু হয়। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে উপজেলা পর্যায়ে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকা উপজেলাগুলোর জন্য একটি করে মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্ধারণ করা হয়। উপজেলা পর্যায়ে গঠিত দেশের সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন ৩১৫টি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৮৮ টি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে পরবর্তীতে জাতীয়করণ করা হয়। বাদ পড়ে ২৭টি প্রতিষ্ঠান। এই ২৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় যুক্ত হয় পেড়িখালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি। উপজেলার মধ্যে সকল ধরণের সুযোগসুবিধা থাকা বিদ্যালয়ে লেখাপড়ায় গুণগত মান খুবই ভালো হলেও জাতীয়করণ থেকে বঞ্চিত করা বিদ্যালয়টি।
দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা সদরের নিকটবর্তী ও ফলাফলে শ্রেষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও এ প্রতিষ্ঠানকে সরকারিকরণের আওতায় আনা হয়নি। এতে এক ধরনের বৈষম্য তৈরি করা হচ্ছে বর্তমান সময়েও।
এ বিদ্যালয়ে চারতলা ভবন, উন্নত আসবাবপত্র, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার ল্যাব, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমসহ আধুনিক শিক্ষার যাবতীয় সুবিধা নিশ্চিত করা হয়। ফলাফলেও এ বিদ্যাপীঠ উপজেলার সেরা অবস্থানে রয়েছে।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ছা-পোষা আমলাদের অপতৎপরতায় এবং প্রভাবশালী নেতাদের পছন্দের ভিত্তিতে অযোগ্য বিদ্যালয় সরকারিকরণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ঘুষ, স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে প্রকৃতপক্ষে যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলো বঞ্চিত হয়েছে।
সচেতন মহল মনে করেন, নতুন করে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ হলেও জাতীয়করণ বঞ্চিত মডেল এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে সরকারের কোন মনোযোগই নেই।
এ বিষয়ে পেড়িখালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শংকর কুমার শিকদার এর সাথে কথা হলে তিনি চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭/৮ শত শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। ফলাফলের দিক দিয়েও সেরা। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে আমাদের বিদ্যালয়টি সর্বদিক দিয়ে শ্রেষ্ঠ হাওয়ায় বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করে গেজেট প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেটি রাতের আধারে তৎকালিন সংসদ সদস্য এবং খুলনা সিটি মেয়র কতিপয় আমলার পরামর্শের ও মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আমাদের বিদ্যালয়টির নাম প্রত্যাহার করায়। এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও নাম পুনঃস্থাপনের দাবীতে তৎকালিন সময়ে এলাকার হাজার হাজার অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও জনসাধারণ প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
খুলনা সিটির সাবেক মেয়র খালেক ও তার সহধর্মীনি রামপাল-মোংলা আসনের এমপি হাবিবুন নাহার আন্দোলন বন্ধ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এমনকি চাকুরীচ্যুত করার হুমকিও দেন তার নেতাকর্মীদের দিয়ে।
এ নিয়ে মডেল প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় কমিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তারা এই ব্যাপারটি এড়িয়ে যায়। অন্তর্বর্তী সরকার সব বৈষম্য দূর করে মডেল বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের উদ্যোগ নেবে এমনটাই প্রত্যাশা রামপালবাসীর।