রাঙ্গাবালী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে অতিথি পাখি: জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়।
মোঃ হানিফ মিয়া রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: || বিএমএফ টেলিভিশন
এক সময় শীত আসলেই পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর আকাশে দেখা যেত হাজার হাজার অতিথি পাখির আনাগোনা। জেলার জাহাজমারা, সোনার চর, চরহেয়ার, তুফানিয়াচরসহ আশপাশের চরাঞ্চল আর গ্রামগঞ্জে শীত মৌসুমে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠত প্রকৃতি। তবে এখন সেই দৃশ্য প্রায় বিলীন। স্থানীয়রা বলছেন, আগে যেসব জায়গায় শত শত পাখি দেখা যেত, এখন সেখানে কয়েকটি পাখিও দেখা যায় না।
এক সময় শীত আসলেই পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর আকাশে দেখা যেত হাজার হাজার অতিথি পাখির আনাগোনা। জেলার জাহাজমারা, সোনার চর, চরহেয়ার, তুফানিয়াচরসহ আশপাশের চরাঞ্চল আর গ্রামগঞ্জে শীত মৌসুমে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠত প্রকৃতি। তবে এখন সেই দৃশ্য প্রায় বিলীন। স্থানীয়রা বলছেন, আগে যেসব জায়গায় শত শত পাখি দেখা যেত, এখন সেখানে কয়েকটি পাখিও দেখা যায় না।
বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয়দের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন, আবাসস্থল ধ্বংস, জলাশয় ভরাট, নির্বিচারে গাছপালা কাটা, খাদ্যের অভাব এবং শিকারীদের দৌরাত্ম্য— এসব কারণে অতিথি পাখিরা তাদের পুরোনো অভয়ারণ্য ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
স্হানীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভিলেজ এডুকেশন রিসোর্স সেন্টার ( ভার্ক) এর প্রকল্প সমন্বয়কারী মোহসীন তালুকদার বলেন, “অতিথি পাখিরা শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্যই বাড়ায় না, তারা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কিন্তু এখন আর আগের মতো দেখা মেলে না। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, কৃষিজমিতে রাসায়নিক ব্যবহার এবং চরাঞ্চলে মানুষের অতিরিক্ত অতিথি পাখি শীকারের কারনে এসব পাখির নিরাবদ আবাসস্হল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
জাহাজমারা সমুদ্র সৈকতের স্হানীয় কৃষক মো. রাসেল হাওলাদার বলেন, আগে শীতকাল এলেই এই সৈকতে হাজার হাজার অতিথি পাখির দেখা মিলত। নানা প্রজাতির পাখিতে মুখর থাকত চারপাশ। কিন্তু এখন আর সেই দৃশ্য দেখা যায় না। বছর বছর পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে, যা আমাদের জন্য খুবই দু:খজনক।
বন বিভাগের স্থানীয় কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, অতিথি পাখিদের আবাস নিশ্চিত করা আমাদের সবার দায়িত্ব। জনগণকে সচেতন হতে হবে, পাখিদের উৎপীড়ন নয়, বরং তাদের স্বাভাবিক বিচরণ ও বাসস্হান রক্ষা করতে হবে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, ঘনঘন বৈরী আবহওয়া ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলে অতিথি পাখির আগমনও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাচ্ছে।
তাই পাখি সংরক্ষণের জন্য আইন প্রয়োগ ও জনসচেতনতা জরুরি।প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ও পাখিদের বাচিয়ে রাখার প্রয়োজন আছে। পাখি হলো প্রকৃতির কীটনাশক। পাখির সংখ্যা কমে গেলে কীটপতঙ্গের অত্যাচারে অসম্ভব হয়ে পড়বে ফসল ফলানো।সেটিই যদি হয়, তাহলে নির্ভর করতেই হবে কীটনাশকের ওপর। কিন্তু এটি তো পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর। যে দেশে পাখি বেশি সে দেশে পর্যটকের সংখ্যা বেশি। কাজেই পাখি ঘাটতি অবশ্যই উদ্বেগের ব্যাপার।
এলাকাবাসী ও পরিবেশবাদীরা চান , সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর দ্রুত উদ্যোগ নিক পাখির আবাসস্হল ফিরিয়ে আনতে এবং শিকার বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করুক। না হলে এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।