পদ্মা অয়েলে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের ফের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ
বিএমএফ টেলিভিশন ডেস্ক || বিএমএফ টেলিভিশন
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনের পরও তার ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের প্রভাব অটুট রয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পদ্মা অয়েল কোম্পানিতে। সম্প্রতি কোম্পানিটির বদলির আদেশে এমন অভিযোগ আবার সামনে এসেছে।
কোম্পানির সূত্রে জানা যায়, ২৮ আগস্ট পদ্মা অয়েলের ১৪ জন কর্মকর্তার বদলির আদেশ জারি হয়। এতে আলোচনায় উঠে এসেছে উপ-ব্যবস্থাপক (পরিচালন) ইকবাল হোসেনের নাম। নাটোর ডিপোর ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই কর্মকর্তা নতুন আদেশে গুরুত্বপূর্ণ মোংলা অয়েল ইনস্টলেশনের ইনচার্জ পদে নিয়োগ পেয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, ইকবাল হোসেন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন এবং সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পদ্মা অয়েলে প্রভাব বিস্তার করতেন। দুর্নীতির নানা অভিযোগ থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত হয়নি। আওয়ামী লীগ আমলে তিনি নিজেকে শেখ হাসিনা ও শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠ দাবি করে প্রভাব খাটাতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
পদ্মা অয়েলের কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এই বদলি নিয়ে। অভিযোগ করা হচ্ছে—শুধু ইকবাল হোসেনকে সুবিধা দিতে বর্তমান ইনচার্জ আখের আলীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যদিও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
বদলির তালিকায় থাকা আবু তালেবের নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কর্মকর্তাদের অভিযোগ—এটি রাজনৈতিক আনুগত্যের ভিত্তিতে করা হয়েছে।
এদিকে কোম্পানির জিএম আসিফ মালেকের বিরুদ্ধেও প্রভাব খাটানোর অভিযোগ রয়েছে। তিনি সাবেক ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে এসেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তেলবাহী লরির সঙ্গে চুক্তি করার অভিযোগ রয়েছে।
পদ্মা অয়েলের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ইকবাল হোসেন–আসিফ মালেকদের প্রভাব কমেনি। বরং তারা এখনও গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে কোম্পানিকে নিয়ন্ত্রণ করছে।ঘটনার সত্যতা যাচাই করার জন্য পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের নতুন এমডি মো. মফিজুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি ফোন রিসিভ করনে নি এবং পরবর্তীতে আর কোনো সাড়া দেননি। উল্লেখ্য, মফিজুর রহমান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) অধীন মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশনস) ছিলেন। গত ১৭ মে ২০২৫ থেকে তিনি পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের এমডি পদে চলতি দায়িত্বে রয়েছেন।
পদ্মা অয়েলের সাধারণ কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, স্বৈরাচারের দোসরদের পদায়ন অবিলম্বে বাতিল করে কোম্পানিকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা হোক।