ভোটারপ্রতি ১০ টাকা ব্যয় করতে পারবেন প্রার্থী, প্রস্তাব করলো ইসি
ডেস্ক রিপোর্ট। || বিএমএফ টেলিভিশন
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একজন প্রার্থী ভোটারপ্রতি সর্বোচ্চ ১০ টাকা ব্যয় করতে পারবেন— এমন বিধানসহ একাধিক সংস্কার প্রস্তাব আইনের খসড়া আকারে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একজন প্রার্থী ভোটারপ্রতি সর্বোচ্চ ১০ টাকা ব্যয় করতে পারবেন— এমন বিধানসহ একাধিক সংস্কার প্রস্তাব আইনের খসড়া আকারে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের কাছে প্রস্তাবিত সংশোধনের বিস্তারিত তুলে ধরেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
তিনি জানান, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন দীর্ঘ এক মাস ধরে ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাব চূড়ান্ত করে।
এই প্রস্তাবনাগুলো সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন ও আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের পর রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে কার্যকর হবে।
নির্বাচনী ব্যয় সীমা:
বর্তমান আইনে নির্ধারিত সর্বোচ্চ ব্যয় ২৫ লাখ টাকা। নতুন প্রস্তাবে এটি বাদ দিয়ে আসনভিত্তিক ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে—প্রতি ভোটারের জন্য ১০ টাকা।
যেমন, গাজীপুর-২ আসনের ৭ লাখ ৭৯ হাজার ৭২৬ ভোটারের জন্য সর্বোচ্চ ব্যয়সীমা হবে প্রায় ৭৮ লাখ টাকা। আর ঢাকা-১৯ আসনে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ ভোটার থাকায় ব্যয়সীমা হবে ৭৫ লাখ টাকা। এছাড়া সবচেয়ে কম ভোটারসংখ্যার আসন ঝালকাঠি-১, যেখানে ২ লাখ ১২ হাজার ভোটারের জন্য সর্বোচ্চ ব্যয় হবে ২১ লাখ ২০ হাজার টাকা।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীদের জামানত ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
নতুনভাবে যুক্ত করা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যে কোনো ফৌজদারি মামলায় যদি কেউ ফেরারি থাকেন, তবে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। আগে কেবল দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত হলে প্রার্থী অযোগ্য হতেন।
কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, “অপব্যবহারের আশঙ্কা থাকলেও বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে এই বিধান যুক্ত করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে অপব্যবহার হলে তা আবার পর্যালোচনার সুযোগ থাকবে।”
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ থাকলেও, এবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়নি।
রিটার্নিং অফিসারকে অনিয়ম প্রমাণিত হলে একটি বা একাধিক কেন্দ্র বা পুরো আসনের নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। সব প্রস্তাব এখনো চূড়ান্ত নয়—সরকারের অনুমোদন ও রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে তা কার্যকর হবে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার।
উল্লেখ্য, এই সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।