প্রভাবশালী বন্দিদের চোখের আড়ালে রাজসাক্ষী মামুন, আছেন নিরাপত্তার চাদরে

ডেস্ক রিপোর্ট। || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:৩৪, মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

কারাগারে নিরাপত্তার চাদরে রয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। ঢাকার কেরানীগঞ্জের বিশেষ কারাগারে অন্যসব প্রভাবশালী বন্দির চোখের আড়ালে রয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়া এই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এখন সম্পূর্ণ গোপনীয়তা ও বিশেষ নিরাপত্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

কারাগারে নিরাপত্তার চাদরে রয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। ঢাকার কেরানীগঞ্জের বিশেষ কারাগারে অন্যসব প্রভাবশালী বন্দির চোখের আড়ালে রয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়া এই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা এখন সম্পূর্ণ গোপনীয়তা ও বিশেষ নিরাপত্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে বর্তমানে কেরানীগঞ্জ বিশেষ কারাগারে আছেন আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ অন্তত ৬৫ জন প্রভাবশালী বন্দি। কিন্তু তাদের সবার থেকে আলাদা রাখা হয়েছে সাবেক আইজিপিকে।

কারা সূত্র বলছে, মামুনকে রাখা হয়েছে একটি ভবনে সম্পূর্ণ একাকী। সেখানে অন্য কোনো বন্দি প্রবেশ করতে পারেন না। এমনকি দূর থেকেও তাকে দেখা যায় না। ফলে একই কারাগারে থাকা প্রভাবশালী রাজনৈতিক বন্দিরাও জানেন না, তিনি কারাগারের কোন অংশে রয়েছেন কিংবা আদৌ সেখানে আছেন কিনা।

বিশেষ সূত্রে আরও জানা গেছে, সাবেক আইজিপির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন কিছু সাধারণ কয়েদি। তারা কাজের ফাঁকে তার সঙ্গে আলাপচারিতা করেন। আদালতে নেওয়ার সময়ও তাকে একা প্রিজন ভ্যানে আনা-নেওয়া করা হয়।

কেরানীগঞ্জ কারাগারে থাকা অন্য রাজনৈতিক বন্দিদের মধ্যে আছেন সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান প্রমুখ। তবে তারাও জানেন না, রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি কোথায় আছেন। কারা কর্তৃপক্ষের এমন গোপনীয় ব্যবস্থাপনা থেকেই বোঝা যায়, তাকে কতটা উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার মধ্যে রাখা হয়েছে।

ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শকের অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন কেরানীগঞ্জ কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার। সোমবার (২৫ আগস্ট) তিনি বলেন, কারাগারে সব বন্দিদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কর্তৃপক্ষ। ২৪ ঘণ্টা কারারক্ষী এবং কর্মকর্তারা নজরদারিতে থাকেন। পাশাপাশি আধুনিক ইলেকট্রনিক ডিভাইসও ব্যবহৃত হয়।

তিনি বলেন, রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে বিশেষ কারাগারে আলাদা রাখা হয়েছে। অন্যান্য বন্দিরা তো দূরের কথা, সেখানে নির্দেশনা ছাড়া কারারক্ষী বা কয়েদিরাও যেতে পারে না। তিনি ডিভিশনপ্রাপ্ত কারাবিধি অনুযায়ী সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। বিশেষ ভবনে কাজ করার জন্য যে কয়েদিরা নিয়োজিত, তারাও কেবল নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে।

উল্লেখ্য, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের ৩১তম মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক এবং অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এর আগে গত ১০ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বলেছেন, জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে আমাদের বিরুদ্ধে হত্যা-গণহত্যা সংঘটনের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য। এ ঘটনায় আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি। আমি রাজসাক্ষী হয়ে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তার বিস্তারিত আদালতে তুলে ধরতে চাই। রহস্য উন্মোচনে আদালতকে সহায়তা করতে চাই।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়