জিমে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে রয়েছেন যারা, সতর্ক থাকবেন যেভাবে

অনলাইন ডেস্ক || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ দুপুর ১২:৩৩, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

শরীরচর্চা আমাদের শরীর ও মনে সুস্থতা আনে—এ কথা সর্বজনবিদিত। নিয়মিত ব্যায়ামে বাড়ে রক্তসঞ্চালন, যার ফলে সক্রিয় হয় হৃৎপিণ্ড, কমে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি। তবে শরীরচর্চার এই উপকারের পাশপাশি কিছু ব্যতিক্রমও রয়েছে। কখনো কখনো হৃৎপিণ্ডকে অতিরিক্ত কাজ করতে গিয়ে তা পড়ে যেতে পারে চাপে, যা ডেকে আনতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ। তাই ব্যায়াম করলেও প্রয়োজন সচেতনতা ও ভারসাম্য। এমনটাই বলছিলেন ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান।

শরীরচর্চা আমাদের শরীর ও মনে সুস্থতা আনে—এ কথা সর্বজনবিদিত। নিয়মিত ব্যায়ামে বাড়ে রক্তসঞ্চালন, যার ফলে সক্রিয় হয় হৃৎপিণ্ড, কমে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি। তবে শরীরচর্চার এই উপকারের পাশপাশি কিছু ব্যতিক্রমও রয়েছে। কখনো কখনো হৃৎপিণ্ডকে অতিরিক্ত কাজ করতে গিয়ে তা পড়ে যেতে পারে চাপে, যা ডেকে আনতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ। তাই ব্যায়াম করলেও প্রয়োজন সচেতনতা ও ভারসাম্য। এমনটাই বলছিলেন ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান।

জিমে কেন হার্ট অ্যাটাক
সাধারণত ভারী ব্যায়াম জিমেই করা হয়। যেকোনো ভারী ব্যায়ামের সময় বা দ্রুতগতিতে ব্যায়াম করার সময় দেহে রক্তপ্রবাহ বাড়াতে গিয়ে হৃৎপিণ্ডকে অনেকটা বেশি কাজ করতে হয়। বাড়তি কাজ করতে হৃৎপিণ্ডের নিজেরও তো রক্তের জোগান চাই। কিছু শারীরিক সমস্যার কারণে হৃৎপিণ্ডের নিজস্ব রক্তপ্রবাহ বাধা পেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। জিম ছাড়া অন্য যেকোনো জায়গায় এ ধরনের শরীরচর্চা করলেও এমনটা হতে পারে।

কারা আছেন ঝুঁকিতে
আগে থেকে যাঁদের হৃৎপিণ্ডে কোনো সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ঝুঁকি বেশি। তেমন কোনো লক্ষণ না থাকায় অনেকে জানতেও পারেন না, হৃৎপিণ্ডের কোনো সমস্যা আছে তাঁর। তা ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা প্রি-ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং ধূমপায়ীরাও আছেন ঝুঁকিতে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন এবং এনার্জি ড্রিংক গ্রহণেও এমন ঝুঁকি বাড়তে পারে। পরিবারে হৃদ্‌রোগের ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি বাড়ে। কারও কারও ক্ষেত্রে পানিশূন্যতা বা লবণের ঘাটতিও হতে পারে কারণ।

চাই সতর্কতা
অনেকেই কম বয়সে বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হন। তবে অনেক ক্ষেত্রে এসব রোগের তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না। তাই আপনি নিজেকে সম্পূর্ণ সুস্থ মনে করলেও ভারী ব্যায়াম বা দ্রুতগতির ব্যায়ামের চর্চা শুরুর আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আর দীর্ঘমেয়াদি কোনো রোগে ভুগলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নেবেন, কী ধরনের ব্যায়াম আপনার জন্য নিরাপদ। এমনকি ব্যায়ামে অভ্যস্ত হলেও ব্যায়ামের সময় নিজের প্রতি একটু খেয়াল রাখুন। খারাপ লাগলে সঙ্গে সঙ্গেই থামিয়ে দিন নিজেকে।

যেসব বিষয় খেয়াল রাখা উচিত সবারই
১. ভারী ব্যায়াম বা দ্রুতগতির ব্যায়াম হুট করে শুরু করতে নেই। প্রথমে কিছুদিন হালকা ব্যায়ামের অভ্যাস করুন। ধীরে ধীরে ব্যায়ামের তীব্রতা বাড়াবেন। এ বিষয়ে একজন দক্ষ ট্রেনার আপনাকে সঠিক পরামর্শ দিতে পারবেন।

২. ব্যায়ামের আগে ওয়ার্মআপ এবং ব্যায়ামের পর কুল ডাউন করুন। অতিরিক্ত চা, কফি, চকলেট খাবেন না। এনার্জি ড্রিংক না খাওয়াই ভালো।
ব্যায়ামের আগে, ব্যায়ামের বিরতিতে এবং ব্যায়ামের পর নিয়মমাফিক খানিকটা পানি খাওয়া উচিত। ব্যায়ামের সময় খুব ঘাম হলে স্যালাইন, ইলেকট্রোলাইট ড্রিংক বা সামান্য লবণপানি গ্রহণ করা উচিত।

৩. জিমে ব্যায়াম করলে এমন জিম বেছে নেওয়া উচিত, যেখানে কোনো জরুরি পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে ট্রেনার কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) দিতে পারেন। জীবনরক্ষাকারী এই কৌশল সবারই শিখে রাখা উচিত।

৪. চিকিৎসক যদি এমন নির্দেশনা দিয়ে থাকেন যে আপনার হৃৎপিণ্ডের গতি খুব বেশি বাড়তে দেওয়া উচিত নয়, সে ক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ডের গতি ‘মনিটর’ করার জন্য একটি রিস্টব্যান্ড ব্যবহার করতে পারেন।

যেকোনো ব্যায়ামের সময় অতিরিক্ত হাঁপালে, হৃৎপিণ্ডের গতি অতিরিক্ত বেড়ে গেছে বা অনিয়মিত হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হলে, বুকে চাপ অনুভব করলে, মাথা ঘোরালে কিংবা অন্য কোনো কারণে খারাপ লাগলে ব্যায়াম থামিয়ে দিন। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে দেরি করবেন না। তাতে হয়ে যেতে পারে অপূরণীয় ক্ষতি।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়