জামায়াতের সঙ্গে জোট: দলে বিদ্রোহ–পদত্যাগ, কতটা চাপে এনসিপি

ডেস্ক রিপোর্ট। || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:১৮, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী জোট করায় বড় ধরনের রাজনৈতিক চাপে পড়েছে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির ভেতরে শুরু হয়েছে তীব্র বিদ্রোহ; এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন একাধিক শীর্ষ নেতা। সামনে আরও বড় ভাঙনের আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নির্বাচনী জোট করায় বড় ধরনের রাজনৈতিক চাপে পড়েছে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির ভেতরে শুরু হয়েছে তীব্র বিদ্রোহ; এরই মধ্যে পদত্যাগ করেছেন একাধিক শীর্ষ নেতা। সামনে আরও বড় ভাঙনের আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট গঠন করাই এখন বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে এনসিপির জন্য। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে চিঠি দিয়ে লিখিত আপত্তি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির অন্তত ৩০ জন নেতা। তাঁদের অভিযোগ, জামায়াতের সঙ্গে জোট এনসিপির ঘোষিত আদর্শ, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা এবং গণতান্ত্রিক নৈতিকতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে দলীয় কোন্দল। রোববার দুপুরে পদত্যাগ করেছেন দলটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন। এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় পদত্যাগ করেন সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আজ-কালের মধ্যেই পদত্যাগ করতে পারেন আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতা।

এমন পরিস্থিতিতে এনসিপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, এটি আদর্শিক নয়, বরং কেবল নির্বাচনী কৌশল হিসেবেই জামায়াতের সঙ্গে জোট। এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দিন মোহাম্মদ বলেন, ‘পার্টির ভেতরে ভারসাম্যহীনতা থাকলে আমি সেখানেই লড়াই করব। পার্টি ছেড়ে আমি কোথাও যাব না। একটি রাজনৈতিক জোটের কমন ইশতেহার বা স্লোগান থাকে। আমরা তো জামায়াতের স্লোগান ব্যবহার করছি না। মার্কারও কোনো সম্পর্ক নেই; কৌশলগতভাবে ৩০টি আসনে জামায়াত তাঁদের প্রার্থীকে সরিয়ে আমাদের সমর্থন দেবে।’

জামায়াত-এনসিপি জোটের বিষয়টি চূড়ান্ত হয় শুক্রবার রাতে। জামায়াত ৩০টি আসন ছেড়ে দিতে সম্মত হলেও এনসিপির পক্ষ থেকে ৫৬টি আসনের দাবি জানানো হয়েছে। তবে এই জোট নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গণঅভ্যুত্থানের স্টেকহোল্ডার হিসেবে এনসিপিকে জোটে নিলে জামায়াত কৌশলগতভাবে লাভবান হতে পারে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এনসিপির ভেতরে আরও বড় বিভাজন তৈরি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. শামিম রেজা বলেন, ‘জামায়াতের অতীত ভূমিকা নিয়ে যে রাজনৈতিক বিতর্ক আছে, এনসিপিকে সঙ্গে নিয়ে তারা সেটি আড়াল করার চেষ্টা করবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—এনসিপি আদর্শিকভাবে কোথায়? তারা যে মধ্যপন্থার দল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল, এমন জোটের পর সেই ভাবমূর্তি বজায় রাখা নিকট ভবিষ্যতে কঠিন হয়ে পড়বে।’

জামায়াতের সঙ্গে জোট এনসিপির জন্য নির্বাচনী কৌশল নাকি রাজনৈতিক আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত—সেই প্রশ্নে এখন তোলপাড় চলছে রাজনীতির মাঠে।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়