নাইজেরিয়ায় বোমা হামলা: ট্রাম্পের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক। || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ দুপুর ০২:৪২, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আইএস (আইএসআইএল/আইএসআইএস)–সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘নিরীহ খ্রিস্টানদের’ রক্ষা করতে নাইজেরিয়াতে ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার এক ঘোষণায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ তথ্য জানান।

নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে আইএস (আইএসআইএল/আইএসআইএস)–সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘নিরীহ খ্রিস্টানদের’ রক্ষা করতে নাইজেরিয়াতে ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার এক ঘোষণায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ তথ্য জানান।

বাস্তবতা হলো ওই অঞ্চলে ধর্মীয় কোনো সংঘাত নয় বরং মুসলমান পশুপালক খ্রিষ্টান কৃষিজীবিদের মধ্যে চলে আসা অর্থনৈতিক সংঘাতকে ধর্মীয় সহিংসতা বলে বর্ণনা করা হয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

প্রতিবেদনটিতে উঠে আসে, বড়দিনে চালানো এই হামলাকে নজিরবিহীন বলা হচ্ছে, কারণ এটিই নাইজেরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সরাসরি সামরিক অভিযান। এর আগে দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র শুধু প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা সহায়তা ও অস্ত্র সহযোগিতায় সীমাবদ্ধ ছিল। কী ঘটেছে ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে জানান, তার নির্দেশে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমে ‘আইএস সন্ত্রাসীদের অবস্থানে’ একাধিক নিখুঁত হামলা চালানো হয়েছে।তিনি দাবি করেন, এসব গোষ্ঠী ‘নিরীহ খ্রিস্টানদের’ লক্ষ্য করে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালায়। তবে কোন কোন লক্ষ্যবস্তুতে বা কতটি হামলা চালানো হয়েছে—সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

নাইজেরিয়ায় বাস্তব চিত্র কী

বিশ্লেষকদের মতে, নাইজেরিয়ার পরিস্থিতি ট্রাম্প প্রশাসনের বক্তব্যের চেয়ে অনেক বেশি জটিল। প্রায় ২০ কোটি জনসংখ্যার এই দেশটিতে ২৫০টির বেশি জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে। এখানে শুধু উগ্রবাদী গোষ্ঠীর সহিংসতাই নয়, দীর্ঘদিন ধরে জাতিগত ও ধর্মীয় সংঘাত চলছে।

দেশটিতে বহু বছর ধরে সহিংসতা চলছে। এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম গবাদিপশু পালক এবং বিভিন্ন সংখ্যালঘু খ্রিস্টান কৃষক সম্প্রদায়ের মধ্যে জমি ও পানির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষ ঘটে আসছে।সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সহিংসতা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র–নাইজেরিয়া নিরাপত্তা সহযোগিতার ইতিহাস

বোকো হারাম সংকটের সময় যুক্তরাষ্ট্র নাইজেরিয়া ও আশপাশের দেশগুলোকে প্রশিক্ষণ ও গোয়েন্দা সহায়তা দিয়েছিল। লেক চাদ অঞ্চলভিত্তিক বহুজাতিক যৌথ টাস্কফোর্সের মাধ্যমে এই সহযোগিতা চলত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই জোট ভেঙে পড়ছে।

নাইজার সামরিক সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর জোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছে, আর চাদও প্রত্যাহারের হুমকি দিচ্ছে। ২০২৪ সালে নাইজার থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ায় সাহেল অঞ্চলে উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা বেড়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

নাইজেরিয়ায় সহিংসতা বাস্তব ও ভয়াবহ হলেও এটি শুধুমাত্র আইএস বা ধর্মীয় উগ্রবাদ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। ভূমি সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্বল শাসনব্যবস্থা ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ভাঙনের মতো বিষয়গুলো এই সংকটকের মূল।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়