কুষ্টিয়া সিভিল সার্জনে নিয়োগে অনিয়ম প্রশ্নপত্র ফাঁসের সত্যতা পেয়েছে দুদক

আজিজুল ইসলামঃ || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:২৩, বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১৩ কার্তিক ১৪৩২
ছবি: বিএমএফ টেলিভিশন।

ছবি: বিএমএফ টেলিভিশন।

কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক। উল্লেখ্য, গত ২৪ অক্টোবর (শুক্রবার) কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সাতটি পদের ১১৫টি শূন্য পদে নিয়োগ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৭৮৯ জন। এর মধ্যে ৫০ ভাগের কিছু বেশি পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু পরীক্ষার আগেই রাত থেকেই কুষ্টিয়া শহরের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাঃ হোসেন ইমামের শহরের কালিশংকপুরের বাড়িতে ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থীর রহস্যজনক প্রবেশ ও পরীক্ষার আগ মুহূর্তে বের হওয়ার দৃশ্যে বিতর্কের জন্ম দেয়। 

কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুদক। উল্লেখ্য, গত ২৪ অক্টোবর (শুক্রবার) কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সাতটি পদের ১১৫টি শূন্য পদে নিয়োগ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৭৮৯ জন। এর মধ্যে ৫০ ভাগের কিছু বেশি পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু পরীক্ষার আগেই রাত থেকেই কুষ্টিয়া শহরের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাঃ হোসেন ইমামের শহরের কালিশংকপুরের বাড়িতে ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থীর রহস্যজনক প্রবেশ ও পরীক্ষার আগ মুহূর্তে বের হওয়ার দৃশ্যে বিতর্কের জন্ম দেয়। 

গত বুধবার রাত ১০টার দিকে দুদকের ভেরিফাইড ফেইসবুক পেজে খবরটি নিশ্চিত করেছে। প্রাথমিক তদন্তে সিভিল সার্জন অফিসের গত শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) শুক্রবারের নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইলেক্টনিক্স মিডিয়া এবং সংবাদপত্রে উঠে আসা অনিয়মের খবরের প্রেক্ষিতে দুদক অনুসন্ধানে নামে আর অনুসন্ধানের শুরুতেই নিয়োগ পরীক্ষার অনিয়ম ও দুর্নীতির এবং প্রশ্ন পত্রফাঁসের বিষয়ে তাদের তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে। এতে বলা হয়-দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়া হতে গত ২৬ ও ২৭ অক্টোবর দুই দিনব্যাপী এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয় এবং বুধবার ২৯ অক্টোবর তদন্ত কমিটির তদন্ত শেষ হবে বলেন দুদক। অভিযান পরিচালনাকালে স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ পরীক্ষার দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত সংগৃহীত প্রাথমিক তথ্যের আলোকে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। অতঃপর সিভিল সার্জন কার্যালয় হতে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি সংগ্রহ করে দুদক টিম। সার্বিক পর্যালোচনায় স্থানীয় বিভিন্ন দপ্তরের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের যোগসাজশে প্রশ্ন ফাঁসের এ অপরাধ সংগঠিত হয়েছে মর্মে টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়। তৎপ্রেক্ষিতে জড়িত মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের মোবাইল ফোনসমূহ এবং অন্যান্য আলামত জব্দ করে দুদক টিম। প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশপূর্বক টিম কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

এদিকে সিভিল সার্জন অফিসের নিয়োগ প্রক্রিয়ার অনিয়ম ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রশাসন অধ্যাপক ডাক্তার খায়ের আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্বে আসা স্বাস্থ্য অধিপ্তরের তিন সদস্যের কমিটির সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। বুধবার (২৯ অক্টোবর) তদন্ত কমিটির তদন্ত শেষ হবে। এ কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডাক্তার খায়ের আহমেদ চৌধুরী গত সোমবার সিভিল সার্জন অফিসে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে যেয়ে বলেন, ঘটনার ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও আমরা বিশ্লেষণ করেছি। পাশাপাশি আরএমও ডাক্তার হোসেন ইমামের সংশ্লিষ্টতাসহ সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।  তিনি বলেন, এই মুহূর্তে বিস্তারিত জানাতে না পারলেও কিছু একটা যে ঘটেছে, সে গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তদন্তে শেষে প্রকৃত ঘটনা পাওয়া যাবে বলে আশা রাখি। এদিকে দুদক সোমবার প্রথম দিনে সিভিল সার্জন অফিসে হানা দিয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাঃ হোসেন ইমামের বড় ভাই কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসের উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হাসান ইমামের দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করে।

মোবাইল ফোনের কল লিষ্ট দেখে এই অনিয়মের অনেক প্রশ্ন এবং উত্তর দুদকের হাতে বলে সূত্রটি জানায়। এদিকে ছাত্র জনতার চাপের মুখে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন অফিসের ১১-২০ গ্রেডের শূন্যপদে জনবল নিয়োগের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় শনিবার (২৫ অক্টোবর) সংশ্লিষ্ট নিয়োগ কমিটি। রবিবার সকালে নিয়োগ বাতিল ও সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসকের অপসারনের দাবীতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের ব্যস্ততম এনএস রোড অবরোধ করে সিভিল সার্জন অফিসের সামনে অবস্থান নেয়। ছাত্র-জনতা। পরে সড়ক থেকে উঠে এসে সিভিল সার্জন অফিসে ভবনের নীচে অবস্থান নেয় ছাত্র জনতা। এসময় উপায়ন্ত না পেয়ে বাধ্য হয়ে সিভিল সার্জন অফিস থেকে নীচে নেমে ছাত্র জনতার দাবী মেনে নিতে ২দিন সময় প্রার্থনা করেন। ছাত্র জনতা ২দিনের মধ্যে তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি এবং নিয়োগ পরিক্ষা স্থগিত করার আশ্বাসের প্রেক্ষিতে অবস্থান ধর্মঘট তুলে নেয়।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়