মেহেরপুরে কর্মক্ষেত্রে বাড়ছে নারীর অংশগ্রহণ- নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছে গ্রামের নারীও
মেহেরপুর প্রতিনিধি। || বিএমএফ টেলিভিশন
মেহেরপুরে দিন দিন কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ দৃশ্যমানভাবে বাড়ছে। ছোট উদ্যোক্তা প্রকল্প, এনজিও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কৃষিভিত্তিক কাজেও নারীরা আগের তুলনায় বেশি অংশ নিচ্ছেন। বিশেষ করে গ্রামীণ নারীদের মধ্যেও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা এখন স্পষ্ট।
মেহেরপুরে দিন দিন কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ দৃশ্যমানভাবে বাড়ছে। ছোট উদ্যোক্তা প্রকল্প, এনজিও, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কৃষিভিত্তিক কাজেও নারীরা আগের তুলনায় বেশি অংশ নিচ্ছেন। বিশেষ করে গ্রামীণ নারীদের মধ্যেও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা এখন স্পষ্ট।
এক সময় ছিল, নারীরা যখন ঘরের বাইরে এক পা রাখলেই সমাজ তাদের তিরস্কারের চোখে দেখত। সেই নারীরা আজ নারী উদ্যোক্তা, নারী কৃষক, নার্স ও শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশায় অংশগ্রহণ করছে। এমনকি তারা ছুটে চলেছেন ধানক্ষেতে, ইটভাটায়, রাস্তা মেরামতের কাজেও।
কৃষিকাজে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও দেখাচ্ছে তাদের দক্ষতা। পেঁয়াজ, কচু, মরিচ তোলা ও বাছাইয়ে নারীদের অংশগ্রহণ পুরুষদের চেয়ে অনেক বেশি।
এছাড়া নারীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও এনজিও থেকে প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্রঋণ পেয়ে অনেক নারী হাঁস-মুরগি পালন, হস্তশিল্প ও অনলাইন ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছেন।
মেহেরপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার জান্নাত জারা বলেন, একটি আইটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করছি। বতর্মানে যা আয় হয় তা থেকে নিজের খরচসহ পরিবারকেও কিছুটা সহযোগিতা করতে পারছি।
সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের নার্গিস খাতুন বলেন, এক সময় শুধু সংসারের কাজ করতাম। এখন স্থানীয় একটি সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কাজ করে নিজেই রোজগার করছি।
মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের শারমিন আক্তার। নিজ বাড়ির উঠানে আঙ্গুর চাষ করে বাজিমাত করেছেন। শারমিন জানান, করোনার সময় বাচ্চার দুধ কিনতে বহুজনের কাছে টাকা ধার চেয়েছিলাম। কিন্তু তেমন কেউ সাহায্য করিনি। পরে বাড়িতেই আঙ্গুর চাষ শুরু করি। গত দু'বছর ধরে ফলন পাচ্ছি। আল্লাহর রহমতে এখন ভালো আছি।
মেহেরপুরে অনেক নারী পারিবারিকভাবে গড়েছেন গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি ও ভেড়ার খামার। এসব খামার থেকে নিজেরা যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন তেমনি পরিবারে ফিরছে স্বচ্ছলতা। এছাড়াও বিভিন্ন শপিংমলে নানান পদে কাজ করছেন মেয়েরা। স্বনির্ভর হতে চায় বর্তমান প্রজন্মের মেয়েরা। যেকোন কাজকে দক্ষতা অর্জন হিসেবে দেখছে তরুণীরা। শহরে গড়ে উঠেছে নারী-চালিত বেশ কিছু বিউটি পার্লার, বুটিক হাউজ ও খাবারের দোকান।
স্থানীয় সমাজকর্মী মাহবুবুল হক মন্টু বলেন, আগের চেয়ে গ্রামীণ নারী শ্রমিকরা অনেক বেশি সচেতন হয়েছেন। নানা কাজে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছে। এতে নিজে যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছে, পাশাপাশি গোটা আর্থসামাজিক উন্নয়নেও ভুমিকা রাখছে।
মেহেরপুর মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাসিমা খাতুন জানান, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ায় এই পরিবর্তন এসেছে। আমরা আরও প্রশিক্ষণ ও সহায়তার উদ্যোগ নিচ্ছি।
বর্তমানে নারীরা বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, আয়বর্ধক কাজ শিখছেন। নিজেরাই উদ্যোক্তা হচ্ছে। নানা কর্মে জড়াচ্ছেন।