দালালের খপ্পরে নিখোঁজ যুবক, ছেলেকে ফেরানোর আকুতি নিয়ে বাবার সংবাদ সম্মেলন

মেহেরপুর প্রতিনিধি। || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ বিকাল ০৩:০৮, শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৫, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ছবি: বিএমএফ টেলিভিশন।

ছবি: বিএমএফ টেলিভিশন।

দালালের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সিঙ্গাপুরে পাঠানো ২০ বছরের ছেলে সজীব হোসেনকে তিন মাস ধরে খুঁজে পাচ্ছেন না মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আফজাল হোসেন। সর্বস্ব বিক্রি করে ছেলে বিদেশ পাঠালেও এখন তিনি নিঃস্ব—আর এ অবস্থায় ছেলেকে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়ে শনিবার সকালে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

দালালের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে সিঙ্গাপুরে পাঠানো ২০ বছরের ছেলে সজীব হোসেনকে তিন মাস ধরে খুঁজে পাচ্ছেন না মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আফজাল হোসেন। সর্বস্ব বিক্রি করে ছেলে বিদেশ পাঠালেও এখন তিনি নিঃস্ব—আর এ অবস্থায় ছেলেকে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়ে শনিবার সকালে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আফজাল হোসেন জানান, ২০২৫ সালের ৫ অক্টোবর সাহারবাটিয়া গ্রামের কড়ইতলা পাড়ার দালাল খামু ব্যাপারীর ছেলে মিরাজুল ইসলামের মাধ্যমে সজীবকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর জন্য ১৪ লাখ টাকার চুক্তি করেন। সিঙ্গাপুরের সিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন পিডিবি লিমিটেড কোম্পানিতে লেবার হিসেবে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। চুক্তির অংশ হিসেবে প্রথমে ২ লাখ টাকা অগ্রিম নেন মিরাজুল ইসলাম। এরপর ধাপে ধাপে ২০২৪ সালের ৮ জানুয়ারি ২ লাখ, ৩ মার্চ ১ লাখ এবং ইসলামী ব্যাংকের গড়াবাড়িয়া শাখার মাধ্যমে আরও ৯ লাখ ৯ হাজার ২০০ টাকা পরিশোধ করা হয়।

আফজাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, শর্ত অনুযায়ী সজীবকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও সেখানে ৯ মাস বিনা বেতনে কাজ করানো হয়। পরে জানতে পারেন, ওই ৯ মাসের বেতন সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত মিরাজুল ইসলামের ছেলে সাহাবুল ইসলাম তুলে নিয়েছেন। এদিকে সজীব যে কোম্পানিতে কাজ করছিলেন, সেটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এর পর থেকেই গত তিন মাস ধরে ছেলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

তিনি আরও জানান, চুক্তিতে উল্লেখ ছিল—যদি কোম্পানি কাজ দিতে না পারে, তাহলে প্রতি মাসে ৫০-৬০ হাজার টাকা সজীবকে দেওয়া হবে। কিন্তু তিন মাস ধরে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি, বরং দালালের পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।

টাকা লেনদেনের সময় উপস্থিত থাকা কাথুলী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম বলেন, প্রায় দেড় বছর আগে পাসপোর্টসহ অর্ধেক টাকা নগদ দেওয়া হয়েছিল। পরে ব্যাংকের মাধ্যমে বাকি টাকা পরিশোধ করা হয়। কিন্তু এতদিনেও সজীবের কোনো স্থায়ী কাজের ব্যবস্থা করেনি দালাল চক্র।

অভিযোগের ব্যাপারে দালাল হিসেবে অভিযুক্ত মিরাজুল ইসলাম দাবি করেন, সজীবকে আইপি লাগিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, দীর্ঘ ৯ মাস তাকে বেতন না দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। চলতি মাসের ২৮ তারিখ দেশের ফেরত আসার কথা রয়েছে। কিছুদিন সময় দিলে পুনরায় তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে।

গাংনী থানার ওসি বাণী ইসরাইল জানান, এ ঘটনায় এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়