স্টিভ জবসের কর্মজীবন বদলে দেওয়া যে একটি সূত্র
আন্তর্জাতিক ডেস্ক। || বিএমএফ টেলিভিশন
প্রায় তিন দশক আগে অ্যাপলের দিশেহারা সময়টায় কোম্পানিকে নতুনভাবে গড়ে তোলার কাজে হাত দিয়েছিলেন মার্কিন প্রযুক্তিবিদ স্টিভ জবস। সেই সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার কথা সম্প্রতি জানিয়েছেন কানাডীয় ব্যবসায়ী ও টিভি ব্যক্তিত্ব কেভিন ও’লিয়ারি। তার মতে, জবসের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি ছিল ‘সিগন্যাল ও নয়েজ’ নামের এক বিশেষ পদ্ধতি।
প্রায় তিন দশক আগে অ্যাপলের দিশেহারা সময়টায় কোম্পানিকে নতুনভাবে গড়ে তোলার কাজে হাত দিয়েছিলেন মার্কিন প্রযুক্তিবিদ স্টিভ জবস। সেই সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার কথা সম্প্রতি জানিয়েছেন কানাডীয় ব্যবসায়ী ও টিভি ব্যক্তিত্ব কেভিন ও’লিয়ারি। তার মতে, জবসের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি ছিল ‘সিগন্যাল ও নয়েজ’ নামের এক বিশেষ পদ্ধতি।
ও’লিয়ারি বলেন, সময় ব্যবস্থাপনা বা লক্ষ্য নির্ধারণ নয়—জবসের সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল জরুরি ও অপ্রয়োজনীয় কাজের পার্থক্য নির্ণয় করার ক্ষমতা। তিনি জানতেন, কোন কাজকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং কোনগুলো বাদ দিতে হবে। এই নীতিই তাঁর পুরো কর্মজীবনে পরিবর্তন এনেছিল।
সিগন্যাল ও নয়েজ কী
কেভিন ও’লিয়ারি খুব সহজভাবে বিষয়টা ব্যাখ্যা করেছেন। সিগন্যাল হলো সেই ৩-৫টি কাজ, যেগুলো আগামী ১৮ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই করতে হবে। এসব এমন কাজ, যা না করলেই নয়। এসবই আপনাকে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নেবে। আর নয়েজ হলো বাকি সবকিছু। যেমন অপ্রয়োজনীয় মিটিং, সময় নষ্ট করে ই–মেইল করা কিংবা নানান ধরনের বিভ্রান্তি।
জবস তার জীবনে এই নিয়ম খুব ভালোভাবে মেনেছেন। তিনি ৮০: ২০ অনুযায়ী কাজ করতেন। জবস চাইতেন, তার সময় আর শক্তির ৮০ শতাংশ যাবে সিগন্যালে। আর নয়েজে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ। কিন্তু সাধারণ মানুষ কী করে? তারা ৫০ শতাংশ সময় সিগন্যালে আর ৫০ শতাংশ নয়েজে দেয়। কেউ কেউ তো আরও খারাপ অবস্থায় থাকে। বেশির ভাগ সময় মিটিং ও মেইল চালাচালি করে ভাবে, গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে না কেন!
ও’লিয়ারির মতে, সফল উদ্যোক্তা এবং অন্যদের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় পার্থক্য। বিজয়ীরা হয়তো সব সময় সবচেয়ে বুদ্ধিমান বা ভদ্র মানুষ হন না, কিন্তু তারা সিগন্যাল চিনতে ভুল করেন না।
নির্মমতার শক্তি
জবস কাজের অগ্রাধিকার ঠিক করতেন একদম নির্মমভাবে। তার কাছে যা কিছু লক্ষ্যের জন্য অপ্রয়োজনীয়, তা-ই নয়েজ। এর মধ্যে পড়ে আরাম, সামাজিক ভদ্রতা, প্রশংসা, এমনকি আবেগও।
কেভিন ও’লিয়ারি বলেন, ‘জবস ভদ্রতাকে দুর্বলতা মনে করতেন, যখন সেটা কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াত। কোনো আলাপ যদি প্রোডাক্ট তৈরি নিয়ে না হতো, তাহলে তার কাছে সেই আলাপের কোনো দাম ছিল না। কেউ যদি যথেষ্ট দ্রুত কাজ না করত, তাকে ছাঁটাই করা হতো। জবস এটা কঠোর হওয়ার জন্য করতেন না, লক্ষ্য অর্জনের জন্য করতেন। তিনি মনে করতেন, দ্রুত কাজ না করাটা মাঝারি মানের নয়েজ। এটাও নয়েজকে প্রশ্রয় দেওয়া।’
এই কঠোরতা জবসকে অনেকের কাছে অসহ্য করে তুলেছিল। কিন্তু এটাই তাকে সফল করেছে। তাঁর এই অবিচল মনোযোগ চারপাশের মানুষকে বাধ্য করত নিজেদের সেরাটা দিতে, নয়তো সরে যেতে হতো।