সাহারা মরুভূমির শুষ্কতম অংশে শিলাপ্রাচীর-নদীখাত, নতুন রহস্য
আন্তর্জাতিক ডেস্ক। || বিএমএফ টেলিভিশন
উত্তর-পূর্ব আফ্রিকায় সাহারা মরুভূমির শুষ্কতম অংশ। সেখানেই ফ্যাকাসে বালির মাঝে ‘নাটকীয় ভাবে’ মাথা তুলে গোল করে দাঁড়িয়ে রয়েছে শিলার প্রাচীর। ঠিক যেন একটা আংটি। তার নাম জাবাল আরাকানু। সেই ছবি ধরা পড়ল আইএসএস (আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র)-এর মহাকাশচারীদের ক্যামেরায়। তার পরেই আরও একবার প্রশ্ন উঠছে, কী ভাবে মরুভূমির মাঝে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে ওই শিলার প্রাচীর? এর নেপথ্যে কি রয়েছে মানুষের হাত বা ভিনগ্রহীদের হাত, না কি রয়েছে প্রাকৃতিক কারণ! শুষ্ক মরুভূমির মাঝে সেই শিলার মাঝে রয়েছে শুষ্ক নদীখাতও। কী ভাবে তা সেখানে এল, রয়েছে প্রশ্ন।
উত্তর-পূর্ব আফ্রিকায় সাহারা মরুভূমির শুষ্কতম অংশ। সেখানেই ফ্যাকাসে বালির মাঝে ‘নাটকীয় ভাবে’ মাথা তুলে গোল করে দাঁড়িয়ে রয়েছে শিলার প্রাচীর। ঠিক যেন একটা আংটি। তার নাম জাবাল আরাকানু। সেই ছবি ধরা পড়ল আইএসএস (আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র)-এর মহাকাশচারীদের ক্যামেরায়। তার পরেই আরও একবার প্রশ্ন উঠছে, কী ভাবে মরুভূমির মাঝে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে ওই শিলার প্রাচীর? এর নেপথ্যে কি রয়েছে মানুষের হাত বা ভিনগ্রহীদের হাত, না কি রয়েছে প্রাকৃতিক কারণ! শুষ্ক মরুভূমির মাঝে সেই শিলার মাঝে রয়েছে শুষ্ক নদীখাতও। কী ভাবে তা সেখানে এল, রয়েছে প্রশ্ন।
দক্ষিণ-পূর্ব লিবিয়ায় সাহারা মরুভূমির যে অংশ রয়েছে, সেখানেই রয়েছে জাবাল আরাকানু। তার কাছেই রয়েছে মিশরের সীমান্ত। এর ৯০ কিলোমিটার পশ্চিমে প্রায় একই ধরনের আরাকানু কাঠামো দেখা যায়। অতীতে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, মরুভূমির উপরে উল্কা আছড়ে পড়ায় এ ধরনের আংটির মতো ভৌগোলিক কাঠামো তৈরি হয়েছে। পরে বিজ্ঞানীরা সেখানে গিয়ে গবেষণা করে দেখেছেন, জাবাল আরাকানুর জন্ম তেমন ভাবে নয়।
বিজ্ঞানীদের মতে, ভূগর্ভ থেকে ম্যাগমা উঠে এসে এই ভূমিরূপ তৈরি করেছে। ম্যাগমা মাটির গভীর থেকে উঠে এসে গহ্বরের চারপাশে সঞ্চিত হয়েছে। সেগুলো শুকিয়ে কঠিন হয়ে যাওয়ার পরে আবার ভূগর্ভ থেকে বেরিয়ে এসেছে ম্যাগমা। আবার তা জমেছে কঠিন শিলাস্তরের উপরে। এ ভাবে স্তরের উপরে স্তর সঞ্চিত হয়ে আংটির মতো উঁচু ভূমিরূপ তৈরি করেছে। এর উপকরণ মূলত ব্যাসল্ট এবং গ্রানাইট। তা ছাড়াও সায়ানাইট, ট্র্যাকাইট, ফোনোলাইটও মিলেছে জাবাল আরাকানুতে। ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা জুড়ে শিলার স্তর ছড়িয়ে রয়েছে। বিজ্ঞানীরা শিলা পরখ করে দেখেছেন, ওই ভূমিরূপ প্রায় ৫ কোটি বছর আগে তৈরি হয়েছিল। জাবাল আরাকানুর ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে জাবাল আল আওয়ায়নাত। তারও গঠন জাবাল আরাকানুর মতোই, এমনটাই বলছেন বিজ্ঞানীরা।
২০২৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আইএসএস থেকে এই জাবাল আরাকানুর ছবি তুলেছেন এক মহাকাশচারী। তাঁর প্রথমে মনে হয়েছিল, মরুভূমির মাঝে কিছুর একটা ছায়া পড়েছে। তাতেই ঘনীভূত হয় রহস্য। ক্রমে স্পষ্ট হয় যে, এটা জাবাল আরাকানু। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৪০০ মিটার উঁচুতে রয়েছে এই আরাকানু। ওই ভূপৃষ্ঠ থেকে আংটির শীর্ষদেশের উচ্চতা প্রায় ৮০০ মিটার। আইএসএস থেকে তোলা ছবিতে এই আংটির মতো জাবাল আরাকানুর ভিতরে দু’টি নদীখাতের খোঁজ পেয়েছেন মহাকাশচারীরা। জাবাল আরাকানুর আশপাশের এলাকায় বছরে ৫ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। বিজ্ঞানীদের প্রশ্ন, সেখানেই এই নদীখাত এল কী ভাবে? সেই নিয়ে নানা মুনির নানা মত। বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করেন, কোটি কোটি বছর আগে এই এলাকার ভৌগোলিক রূপ, আবহাওয়া ভিন্ন ছিল। আজ যেখানে মরুভূমি, সেখানে ছিল নদী। বেদুইনেরা সেই নদীখাতের জল ব্যবহার করতেন বলেও মনে করেন অনেকে। বিজ্ঞানীদের কেউ কেউ মনে করেন, এই নদীখাতের নেপথ্যে রয়েছে রহস্য। তবে তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট ধারণা নেই বিজ্ঞানীদের।