বদলে ফেলুন কিছু অভ্যাস, কমবে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি
অনলাইন ডেস্ক || বিএমএফ টেলিভিশন
কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গ্রহণ করা এবং কিছু ক্ষতিকর অভ্যাস বর্জন করলে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো যেতে পারে। এর মধ্যে প্রধান হলো মদ্যপান পরিহার করা এবং স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে রাখা। এছাড়া হেপাটাইটিস ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করাও গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এ তথ্য প্রকাশ করেছে ‘দি ল্যানসেট কমিশন’।
কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গ্রহণ করা এবং কিছু ক্ষতিকর অভ্যাস বর্জন করলে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো যেতে পারে। এর মধ্যে প্রধান হলো মদ্যপান পরিহার করা এবং স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে রাখা। এছাড়া হেপাটাইটিস ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করাও গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এ তথ্য প্রকাশ করেছে ‘দি ল্যানসেট কমিশন’।
গবেষকেরা জানিয়েছেন, লিভার ক্যান্সারের একটি বড় কারণ ফ্যাটি লিভার, যাকে চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় ‘মেটাবলিক ডিসফাংশন অ্যাসোসিয়েটেড স্টিয়েটোহেপাটাইটিস’ (এমএএসএইচ) বলা হয়। তারা জানিয়েছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে এমএএসএইচ প্রায় ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি এ তথ্যও প্রকাশ্যে এসেছে যে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর ২ থেকে ৫ শতাংশ ক্ষেত্রে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা হলে আগামী ২৫ বছরে ৯০ লাখ থেকে ১ কোটি ৭০ লাখ লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাকে আটকানো সম্ভব।
গবেষণাপত্রটির বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের অধ্যাপক স্টিফেন লাম চ্যান জানান, যারা ডায়াবেটিস এবং স্থূলত্বের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে আরও বেশি করে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য উদ্যোগ নেওয়া উচিত। অর্থাৎ ওজন নিয়ন্ত্রণ বা অতিরিক্ত মদ্যপান না করার মাধ্যমে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমতে পারে।
অধ্যাপক স্টিফেন লাম চ্যান বলেন, ৫টির মধ্যে ৩টি লিভার ক্যান্সারের ক্ষেত্রে দেখা যায় কোনোভাবে হেপাটাইটিস, স্থূলত্ব বা মদ্যপান জড়িত। তাই এই দিকগুলি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্যান্সারের দূরে রাখা সম্ভব।
‘জার্নাল অফ হেপাটোলজি’র ২০২২ সালের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর বিশ্বের ৪৬টি দেশে প্রথম তিনটি ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে একটি লিভার ক্যান্সার। এই গবেষণায় জানানো হয়েছে, ২০৪০ সালের মধ্যে সারা বিশ্বে লিভার ক্যান্সারের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তাই সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।
গবেষণায় জানানো হয়েছে, আগামী দিনে লিভার ক্যান্সারের মোকাবিলায় শিশুদের আরও বেশি করে হেপাটাইটিস বি এবং সি-এর টিকার আওতায় নিয়ে আসা উচিত। এতে আরও জানানো হয়েছে, মদ্যপান, ফ্যাটি লিভার এবং হেপাটাইটিসকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে যে অভ্যাসগুলো পরিবর্তন করা প্রয়োজন
মদ্যপান পরিহার করা: অতিরিক্ত মদ্যপান লিভার সিরোসিস এবং লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই মদ্যপান সম্পূর্ণরূপে পরিহার করা উচিত।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা: অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন।
হেপাটাইটিস সংক্রমণ প্রতিরোধ : হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস লিভার ক্যান্সারের প্রধান কারণ। তাই, হেপাটাইটিস ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য টিকা নেওয়া এবং সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
সুষম খাদ্য গ্রহণ: ফল, সবজি, এবং শস্য জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। ফাস্ট ফুড, অধিক চিনিযুক্ত খাবার এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার বর্জন করা উচিত।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: লিভার ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্তকরণের জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত।
এসব পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।