গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেহাল দশা: পুকুরঘেরা ভবনে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে
নিজস্ব প্রতিবেদক || বিএমএফ টেলিভিশন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার গোপালপুর উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা এখন চরম বেহাল। নেই মাঠ, নেই নিরাপদ পরিবেশ—পুরো স্কুলটিই যেন ঝুঁকির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। বিদ্যালয়ের অধিকাংশ জায়গা দখল করে আছে বড় একটি পুকুর। ফলে নেই কোনো খেলার মাঠ, নেই এসেম্বলি করার জায়গাও। এতে স্কুলের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে অভিভাবক ও শিক্ষকরা সর্বদা আতঙ্কে থাকেন।
### *পুকুরের পাশে ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা*
বিদ্যালয়ের বারান্দার মাত্র চার ফুট দূরেই পুকুরের পানি। সামান্য পা পিছলে গেলেই পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা। শিক্ষার্থীরা জানান—
*“অনেক সময় বন্ধুরা পুকুরে পড়ে যায়। তাই আমরা ক্লাসরুমের বাইরে বের হতেও ভয় পাই।”*
ফলে শিক্ষার্থীরা অবসর সময়েও বাইরে খেলতে পারে না, আর নিরাপত্তাহীন পরিবেশে স্বাভাবিকভাবে শিক্ষাগ্রহণও ব্যাহত হচ্ছে।
### *দুটি শ্রেণিকক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ, ওয়াশব্লকও জরাজীর্ণ*
বিদ্যালয়ের দুটি শ্রেণিকক্ষের দেয়ালে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, যেকোনো মুহূর্তে ভবনটি ধসে পড়তে পারে। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের ওয়াশব্লকটিও জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে শিশু শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনের ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
### *বাজারের ময়লায় দূষিত পরিবেশ*
বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত স্থানীয় বাজারের ময়লা–আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় সেগুলো ফেলা হচ্ছে স্কুলের পাশের জমিতে। এতে দুর্গন্ধ ও অসহনীয় পরিবেশে পড়াশোনা করতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।
### *স্থানীয়দের দাবি—“এভাবে একটি সরকারি স্কুল চালানো অসম্ভব”*
শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের অভিমত—একটি সরকারি স্কুলের অবস্থা যদি এ রকম হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা কীভাবে আলোর পথে এগোবে?
এক শিক্ষার্থী বলে—
*“আমরা মাঠে খেলতে পারি না। পুকুরের জন্য সব সময় ভয় লাগে।”*
### *শিক্ষকদের মতামত*
সহকারী শিক্ষক জানান—
*“এটি গোপালপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী ও বহু পুরনো বিদ্যালয়। যদি সংস্কার করা হয় এবং একটি খেলার মাঠ তৈরি করা যায়, তাহলে শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ আরও বাড়বে।”*
আরেক সহকারী শিক্ষক জানান, নতুন ভবন নির্মাণের অনুমোদন এলেও পুকুরের কারণে প্রকৌশলী সেই ভবন আর নির্মাণ করেননি।
### *প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য*
প্রধান শিক্ষক বলেন—
*“বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা সব সময় উদ্বিগ্ন। পুকুর ভরাট ও নতুন ভবন নির্মাণ হলে শিক্ষার পরিবেশ পুরোপুরি বদলে যাবে।”*
### *এলাকাবাসীর দাবি*
স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি—পুকুরটি জরুরি ভিত্তিতে ভরাট করে বিদ্যালয়ের জন্য নিরাপদ খেলার মাঠ ও স্থায়ী ভবন নির্মাণ করা হোক। এতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং তাদের শেখার পরিবেশ স্বাভাবিক হবে।