বেগম রোকেয়া দিবসে রাজশাহীর ৮ নারী পেলেন ‘অদম্য’ স্বীকৃতি

আবুলহাশেম রাজশাহী ব্যুরোঃ || বিএমএফ টেলিভিশন

প্রকাশিতঃ সন্ধ্যা ০৭:৪০, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ছবি: বিএমএফ টেলিভিশন।

ছবি: বিএমএফ টেলিভিশন।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. আ.ন.ম. বজলুর রশীদ বলেছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছরের বেগম রোকেয়া দিবসের আবেদনটি ভিন্ন রকমের। ‘আমিই রোকেয়া’ কথাটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনেক বিশাল। ১০০ বছর আগে বেগম রোকেয়া যে সংগ্রামের যাত্রা শুরু করেছিলেন, তার সংগ্রামের পথযাত্রায় আজকে আমরা এ পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছি।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. আ.ন.ম. বজলুর রশীদ বলেছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছরের বেগম রোকেয়া দিবসের আবেদনটি ভিন্ন রকমের। ‘আমিই রোকেয়া’ কথাটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য অনেক বিশাল। ১০০ বছর আগে বেগম রোকেয়া যে সংগ্রামের যাত্রা শুরু করেছিলেন, তার সংগ্রামের পথযাত্রায় আজকে আমরা এ পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছি।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়া দিবসে রাজশাহী জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও অদম্য নারীকে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আজকে নারীরা কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। শিক্ষায়, লেখাপড়ায় কিংবা চাকরিতে এমনকি আন্দোলন-সংগ্রামেও আমরা তাদেরকে অংশ নিতে দেখেছি। ডা. সিতারা বেগম, তারামন বিবিসহ অসংখ্য নারী মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। জাতীয় খেতাব পেয়েছেন। আমরা ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানেও দেখেছি নারীরা আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়েছেন, বেগবান করেছেন। কাজেই সব সফলতা ও আন্দোলন-সংগ্রামে নারীদের অংশগ্রহণ আমাদের সমাজে বিদ্যমান রয়েছে।

তিনি বলেন, আজকে অদম্য নারীদের থেকে যে সংগ্রামের কথা শুনলাম তা আসলে গল্পের মতো। মনে হয় কোনো লেখকের লেখনিতে উঠে আসা সংগ্রামী গল্প। কিন্তু বাস্তবেই তারা এই কষ্টকর ও দুরূহ পথ পাড়ি দিয়ে এ পর্যন্ত এসেছেন। এমন পারিবারিক-সামাজিক বাধাসহ বিভিন্ন নির্যাতন, অসহযোগিতা পার করে এ পর্যায়ে আসা সত্যিই খুব দুরূহ। এজন্যই বলা হয় অদম্য নারী, অদম্য পুরুষ কিন্তু বলা হয় না। আজকে যারা সংগ্রামের কথা বললেন এরকম আরও অনেক নারী আছে, তাদেরকে খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অদম্য নারীদের কাছ থেকে যেসব বার্তা পাওয়া গেছে তা অন্যদেরকে সামনের পথ চলায় অনুপ্রেরণা জোগাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এ সময় তিনি তথ্য অধিদফতর, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও গণমাধ্যমকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে অদম্য নারীদের জীবনী নিয়ে ভিজুয়াল ডকুমেন্টারি তৈরি করে প্রচারের জন্য অনুরোধ জানান যাতে করে সমাজের অন্যান্য নারীরা অনুপ্রাণিত হন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাঈমুল হাছান, সিভিল সার্জন ডা. এস.আই.এম. রাজিউল করিম।

রাজশাহী মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক শবনম শিরিন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে ৫টি ক্যাটাগরিতে সিটি কপোর্রেশন পযার্য়ে ৩ জন এবং জেলা পযার্য়ে ৫ জনসহ মোট নির্বাচিত ৮ জন শ্রেষ্ঠ ‘অদম্য নারী’দের মাঝে পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্ট ও সনদ বিতরণ করা হয়।

এবছরে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ‘অদম্য নারী’ হলেন-রাজশাহী হড়গ্রাম বাজারের মোসা. হাছিনা ইয়াসমিন, সফল জননী নারী ক্যাটাগরিতে শালবাগান পাওয়ার হাউস মোড়ের মোসা. নুরজাহান বেগম, নির্যাতনের দুঃস্বপ্ন মুছে জীবনসংগ্রামে জয়ী নারী ক্যাটাগরিতে দাসপুকুরের মোসা. শারমিন বেগম। জেলা পর্যায়ে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ ‘অদম্য নারী’ হলেন হড়গ্রাম বাজারের মোসা. হাছিনা ইয়াসমিন, শিক্ষা ও চাকুরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরিতে রাজশাহী পুঠিয়ার পচামাড়িয়ার সুমনা সরকার, সফল জননী নারী ক্যাটাগরিতে মোহনপুর মহব্বতপুরের মোসা. রাশেদা বেগম, নির্যাতনের দুঃস্বপ্ন মুছে জীবনসংগ্রামে জয়ী নারী ক্যাটাগরিতে চারঘাট মেরামতপুরের মোসা. রাজিয়া খাতুন, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী ক্যাটাগরিতে বাঘা মুর্শিদপুরের মোসা. আরিফা জেসমিন।

অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতির সভানেত্রী এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

Share This Article

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়